দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগের কথা জানান মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক। সেখান থেকে বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী এ কথা জানিয়েছেন।খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি প্রসঙ্গে জাতিসংঘের অবস্থান জানতে চাইলে ডোজারিক বলেন, বাংলাদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনায় জাতিসংঘ মাহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘ বাংলাদেশের চলমান ঘটনা প্রবাহ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বর্তমান সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগী হতে জাতিসংঘ মাহাসচিব বারবার তাগিদ দিয়ে আসছেন।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বুধবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নিম্ন আদালত। একই মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আগামী ৪ মার্চ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি ইতিমধ্যে তিনটি থানায় গেছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। তবে পুলিশ তা অস্বীকার করছে। এদিকে, গেটের ভেতর বসে আছেন একজন নিরাপত্তা কর্মী। ঝড়া পাতায় ভরে গেছে বাড়ির আঙ্গিনা, গেটের বাইরেরটাও ভরে আছে ঝড়া পাতায়। মনে হচ্ছে যেন পরিত্যক্ত একটি বাড়ি। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া গুলশান-২ এর ৮৬ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাড়িটির হাল বর্তমানে এমনিই।
যে কার্যালয়ে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়, কে কার আগে প্রবেশ করবে তা নিয়ে হতো রীতিমত প্রতিযোগিতা, সেই কার্যালয় এখন নেই কোন নেতাকর্মীর ভিড়, নেই কোলাহল। গেটের সামনে গিয়ে ভেতরে তাকালেই মনে হচ্ছে ভূতুড়ে পরিবেশ। গেটের সামনে সাদা পোশাকে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা চেয়ারে বসে অলস সময় কাঁটাচ্ছেন। সামনে পাতা টেবিল। টেবিলে রাখা রয়েছে দু‘টি খাতা। টেবিলের সামনে পাতা চেয়ারে ভিডিও ক্যামেরা ও স্টিল ক্যামেরা নিয়ে বসে আছেন সাদা পোশাকের দুই জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
এই কার্যালয়েই প্রায় দুই মাস ধরে অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। কার্যালয়ে অবস্থান কালেই মারা গেছে তার আদরের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।এমন পারিবারিক বেদনাবিধুর পরিবেশেও খালেদার পাশে নেই তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তার সঙ্গে শুধু আছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রহমান, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, একান্ত সহকারী শিমুল বিশ্বাস, মহিলা দল নেত্রী শিরিন সুলতানাসহ কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। সব মিলিয়ে অনেকটা ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে।