দৈনিকবার্তা-ফেনী,২অক্টোবর : ফেনীর দাগনভূঞা সাব রেজিস্টারের কার্যালয় পলেস্তরা খসে ও ফাটল ধরে মৃতু্য ফাঁদে পরিণত হয়েছে৷ এই অফিস থেকে প্রতি মাসে সরকারের দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও ভবনটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই৷ ফলে জীবনের ঝুকি নিয়ে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা৷
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত এরশাদ সরকারের সময়ে ১৯৮৫ সালে সাব রেজিস্টারের কার্যালয়টি নির্মিত হয়৷ তখন থেকে ওই ভবনে দাপ্তরিক কাজ চলে আসছে৷ মাত্র ৩০ বছরের ব্যবধানে ভবনটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে৷ ভবনে সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় ছাড়াও সেটেলমেন্ট অফিস, যুব উন্নয়ন অফিস, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় রয়েছে৷ ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ বর্ষার সময় দূর্ভোগ চরমে উঠে৷ ছাদ ছুইয়ে পানি পড়ে সকল গুরুত্বপূর্ন দলিল দস্তাবেজ নস্ট হয়ে যাচ্ছে৷ অফিসের ভেতরে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে৷ পলেস্তরা খসে পড়ে কয়েক কর্মচারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ কমকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহৃত টয়লেটটি যেন আরেকটি মৃতু্য ফাঁদ৷ টয়লেটর দরজা ভেঙ্গে পড়েছে এবং ভবনের জানালা গুলোর অবস্থা খুবই নাজুক৷ ভাঙ্গা জানালার সুযোগে সমপ্রতি চোরের দল প্রবেশ করে কার্যালয়ে রক্ষিত টাকা পয়সা নিয়ে গেছে৷ এনিয়ে থানার সাধারণ ডায়েরীও করা হয়৷ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে সরকারী ৬ জন কর্মকর্তা, ১৫ জন নকলনবিশ ও ৭১ জন দলিল লিখক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ এছাড়া সাব রেজিস্টারের কার্যালয়ে স্থান সংকুলানের অভাবে দাপ্তরিক কর্মকান্ড পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছেন কর্মচারীরা৷
সূত্র জানায়, গত আগস্ট মাসে এই অফিস ১ কোটি ৬১ লাখ ৪৩ হাজার ৩শ ২৮ টাকা রাজস্ব আয় করে৷ এছাড়া নয় মাসে গড়ে ১ কোটি ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৩শ ৫৭ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে৷ কিন্তু পরিতাপের বিষয় প্রতিমাসে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও ভবনটি সংস্কারে নেই কোন সরকারী উদ্যোগ৷ এনিয়ে গণপূর্ত অধিদ্প্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একাধিক বার লিখিত ভাবে জানিয়েও কোন ফল হয়নি৷
অফিস সহকারী আবদুল মোতালেব জানান, গত কয়েক বছরে প্রায় ৭/৮ বার উধর্্বতন কতৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে৷ সর্বশেষ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিলও লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে৷ কিছুদিন আগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের লোকজন সরেজমিনে এসে মাপঝোক ও খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ অদ্যাবধি কোন সাড়া মেলেনি৷
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নুর নবী ও সাধারণ সম্পাদক মাও. আবদুর রহিম জানান, সরকার ভবনটি এখনো পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেনি৷ যেকোন মুহুর্তে ধ্বসে পড়ার আশংকা রয়েছে৷ দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা খানম বলেন, সাব রেজিস্টারের কার্যালয় সমস্যাগুলো তিনি খোঁজ খবর নেবেন এবং এবিষয়ে নবাগত সাব রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তারের সাথে কথা বলবেন৷