দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ১০ জুন: গ্রীষ্মের মধুমাস হিসেবে পরিচিত জ্যৈষ্ঠ মাসে ঠাকুরগাঁওয়ে সুস্বাদু ও দেশব্যাপী খ্যাত লিচু গাছগুলোতে ঝুলছে থোকায় থোকায়। আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও এই ফল লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে লিচুর আবাদ। কিন্তু এ বছর প্রচন্ড রোদের তাপের কারণে কোথাও কোথাও লিচুর রং কালো ও ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। তারপরও লাভের আশা করছেন লিচু চাষিরা।
চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৮’শ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ হাজার বাগানে লিচুর চাষ হয়েছে। গোলাপি, চায়না থ্রি, বেদানা, বোম্বাই, কাঠালি সহ বিভিন্ন বাহারি নামের লিচুর চাষ হয় এ জেলায় । সুমিষ্ট ফল হিসেবে ঠাকুরগাঁও জেলার লিচুর সুখ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে।
কৃষি বিভাগের মতে, ঠাকুরগাও জেলার বেলে ও বেলে-দো আঁশ মাটি লিচু চাষের বেশ উপযোগি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর লিচুর চাষ ভালো হয়েছে। বর্তমান দাম শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলে এ জেলার লিচু বিক্রি করে প্রায় ১৬ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের রাজাগাঁও গ্রামে লিচু বাগানের মালিক নজরুল ইসলাম জানান, এবারে লিচু গাছগুলোতে গত বছরের তুলনায় বেশি লিচু ধরেছিল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রচন্ড রোদের তাপের কারণে অনেক গাছের লিচু ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কাচনা গ্রামের লিচু বাগানের মালিক সোলেমা আলী জানান, এ বছর সূর্যের উত্তাপ বেশি হওয়ার কারণে লিচু গাছের গড়ায় রস তেমন একটা ছিলনা। অন্যদিকে প্রচন্ড রোদের তাপে কোথাও কোথাও লিচুর রং কালো হয়ে গেছে এবং লিচু ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। এছাড়াও গত বছরের তুলনায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তারপরও বাজারে ১ হাজার লিচু ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্চে। বর্তমান বাজার দর যদি বৃদ্ধি হয় তাহলে চাষিরা লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
ইতিমধ্যেই ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছেন লিচু বাগান ব্যবসায়ীরা। তারা কৃষকদের নিকট থেকে বাগান ক্রয় করে থাকেন। নারায়নগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে যে লিচু হয় তা স্বাদে-গুনে দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় বেশ ভাল। এই এলাকার লিচু বাংলাদেশ থেকে বিদেশেও যায়। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, এ জেলার মধু মাসের মিষ্টি ফল লিচুর চাহিদা দেশ জুড়ে। অর্থকরি ফল হিসেবেও এ জেলার লিচুর সুখ্যাতি রয়েছে। তাই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে লিচুর আবাদ।