khaleda zia_260_6572_27609

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ মার্চ: দুর্নীতির দুই মামলা অন্য আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে করা খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি ফের পিছিয়েছে। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের একজন বিচারক না থাকায় শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. রেজাউল হক।এ বেঞ্চে তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান থাকলেও বৃহস্পতিবার তিনি অন্য বেঞ্চে ছিলেন।এ মামলায় দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, কনিষ্ঠ বিচারপতি না থাকায় অবকাশের পর শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে।বসন্তকালীন অবকাশের পর আগামী ১ এপ্রিল হাই কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চ বসবে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত পরিবর্তন ও বিচারিক আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত চেয়ে আনা আবেদনের শুনানি আগামী ১ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এ কথা জানান।এর আগে গত ৫ মার্চ শুনানির দিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার ধার্য করা হয়েছিল। গত ২৮ জানুয়ারি বিচারিক আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে আবেদনটি করা হয়। পরে এ আবেদনের সম্পূরক হিসেবে বিচারিক আদালতের জারি করা খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে পরোয়ানা স্থগিত চেয়েও আবেদন দাখিল করা হয় হয়।দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পৃথক দুই দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্র্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে। গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার, আদেশ সংশোধন ও জামিন বহাল রাখতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আনা আবেদনের শুনানি শেষে পরোয়ানা বহাল রেখে গত ৪ মার্চ আদেশ দেয় বিচারিক আদালত। মামলার কার্যক্রম ৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি রয়েছে।

মামলায় পরপর তিন ধার্য তারিখে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়া ছাড়াও আরো দুই আসামির বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্র“য়ারি জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। অন্য দুই আসামি হলেন- আসামিরা হচ্ছেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই মামলায় গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় দুদক মামলা দায়ের করে। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক অভিযোগপত্র দাখিল করে।জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩।

গত বৃহস্পতিবার এ মামলা হাই কোর্টে শুনানির জন্য আসে। তবে এ আদালতে শুনানি চলতে পারে কি-না, সেই প্রশ্নে তা পিছিয়ে যায়।এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন খালেদার আইনজীবীরা। পরে ওই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়ে যায়।জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা দুই মামলার বিচার চলছে ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী এজলাসে।ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক হিসাবে আবু আহমেদ জমাদার এই মামলার বিচার কাজ করছেন।টানা কয়েকটি ধার্য দিনে আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ২৫ ফেব্র“য়ারি এই আদালত খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।এর আগেও এ মামলায় বিচারক পরিবর্তনে একই ধরনের আবেদন নিয়ে হাই কোর্টে এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তবে ওই আবেদন নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই ওই বিচারক বদলি হয়ে যান।