কামাল হোসেন

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ ফেব্রুয়ারি: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের বিষয়ে নাগরিক সমাজের উদ্যোগ ও ক্ষমতাসীন নেতাদের সমালোচনার মধ্যেই গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘সংলাপকে খারাপ শব্দ হিসেবে আখ্যায়িত করার ষড়যন্ত্র চলছে।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কামাল। নাগরিক সমাজের সংলাপের উদ্যোগের বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের অভিযোগ, এর মাধ্যমে নাশকতারীদের ও তাদের এক কাতারে আনা হচ্ছে। ড. কামাল বলেন, সংলাপকে খারাপ শব্দ হিসেবে আখ্যায়িত করার ষড়যন্ত্র চলছে। সংস্কার ও সংলাপ খারাপ শব্দ না। সত্যিকার অর্থে আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কার চাই। দেশের আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধ নির্দেশ না মানার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বেআইনি আদেশ পালনে আপনারা বাধ্য নন। আপনাদের কেউ বেআইনি আদেশ দিতে পারে না। অসাংবিধানিক কাজ করে এ দেশে কেউ পার পায়নি বলেও মন্তব্য করেন গণফোরাম সভাপতি।

দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ও সংঘবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, সবাইকে উঠে পড়ে লাগতে হবে। শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ড. কামাল আরো বলেন, সরকার প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাই জনগণকে সে দায়িত্ব নিতে হবে। আর ক্ষমতার মালিক জনগণ। আর সেই জনগণের কথা শুনবেন না এটা কী করে হয়?

জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘সরকার আজ সরকারি বাহিনীকে রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত করেছে। সংলাপ অবশ্যই জরুরি। সংলাপ না হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, সংলাপের প্রয়োজনীয়তা যারা অস্বীকার করছেন তারা এখন শুধু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করতে চাচ্ছেন। কিন্তু আমরা দেখেছি যখন বাংলাদেশে ভুয়া নির্বাচন হয়, দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অস্বীকার করা হয়, মানুষের ভোটাধিকারকে অস্বীকার করা হয় তখনই দেশে বার বার সঙ্কট, সন্ত্রাস হয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সরকারকে রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতকে রক্ষার জন্য সরকারকেই রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যদিয়ে দেশের সঙ্কটের অবসান হবে।

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড করে সরকার ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালু করেছে। যেখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। আর এই রাষ্ট্রীয় দমন নিপীড়নের জবাব কখনও পেট্রোলবোমা হতে পারে না। আগে দেশে বোমার রাজনীতি ছিল না। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন- সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ ও ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর প্রমুখ।