ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বেড়েছে। ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করার পর এবার পাকিস্তানও দেশটির বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পাকিস্তান তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় নাগরিকদের দেয়া সব ভিসা বাতিল করার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের কিছু কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে ভারতীয় পুলিশ হামলার পেছনে সন্দেহভাজন চারজনের মধ্যে তিনজনের নাম প্রকাশ করে জানিয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি নাগরিক এবং তৃতীয়জন স্থানীয় কাশ্মিরি ব্যক্তি। নামধারী ওই তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তিই পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) সদস্য। অভিযোগের বিষয়ে তাদের কেউই কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে পাকিস্তান ওই হামলায় তাদের ভূমিকা থাকার ভারতীয় দাবি অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির এক বিবৃতিতে পেহেলগাম হামলার সাথে পাকিস্তানের যোগসূত্র থাকার বিষয়টি বাতিল করে দেয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এর কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত বা যাচাইযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পেহেলগামে হামলার পর বুধবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দু’দেশের মধ্যে চলাচলের প্রধান স্থলপথ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করে দেয়া এবং ছয় দশকের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা।
পাকিস্তান এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, পানি বন্ধ বা অন্য দিকে সরানোর যে কোনো প্রচেষ্টা ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচিত হবে।
দেশটি পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় মালিকানাধীন বা ভারত পরিচালিত সব বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভারতের সাথে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে। এছাড়াও পাকিস্তানে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে কূটনীতিকের সংখ্যা কমিয়ে ৩০ জন করা হয়েছে এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ৩০ এপ্রিলের আগে পাকিস্তান ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।