কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার।
ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সফর স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার ২৭-২৮ এপ্রিল তার নির্ধারিত বাংলাদেশ সফর সম্পন্ন করতে পারছেন না। পরবর্তীতে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সফরের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।”
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনার কারণে সফর স্থগিতের অনুরোধ জানানো হয় বাংলাদেশকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উভয়পক্ষের সম্মতিতে নতুন সময়সূচি ঠিক করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ঢাকা সফর করেন। ওই সফরকালে প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইসাক দারের সফরের সময়সূচি চূড়ান্ত করা হয়েছিল।
সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকা-ইসলামাবাদ প্রস্তুতি নিচ্ছিল বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতি খাতে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের। ২৮ এপ্রিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ছিল ইসাক দারের।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খান ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকা সফর করেছিলেন।
পরবর্তীতে, ২০২২ সালের জুলাইয়ে হিনা রাব্বানির আবারও ঢাকা সফরের সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ওই সময় ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের প্রাক্কালে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে পাকিস্তানের পতাকা জুড়ে দিয়ে একটি ছবি প্রকাশ করায় কূটনৈতিক অস্বস্তির সৃষ্টি হয়। এতে সফর বাতিল হয় বলে জানা যায়।
এছাড়া, ২০২১ সালে ওআইসি`র জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তান সফরের কথা থাকলেও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শেষ মুহূর্তে সফর বাতিল করেন। তার পরিবর্তে পাঠানো হয় তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনকে। ২০২২ সালের মার্চে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকেও আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি সফরে যাননি।