দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৭অক্টোবর: ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের খুনীদের দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মির দাবীতে (২৮ অক্টোবর, ২০১৪) মঙ্গলবার সারা দেশব্যাপী শানত্মিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান সোমবার বিবৃতি প্রদান করেছেন৷
বিবৃতিতে তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ইতিহাসের এক কালো দিবস৷ ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শানত্মিপূর্ণ সমাবেশে লগি-বৈঠা দিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৬ জন নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল এবং কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে আহত করেছিল৷ সেদিন তারা সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল৷ আলস্নাহর মেহেরবাণীতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সীমাহীন ত্যাগ-কুরবানীর বিনিময়ে তাদের সে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়৷
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান তিনি বলেন, সেদিন ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেই ৰানত্ম হয়নি৷ তারা নিহতদের লাশের উপর দাঁড়িয়ে উল্লাস নৃত্য করেছিল৷ তাদের নৃশংসতা ও পৈশাচিকতা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে৷ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও টেলিভিশনে সন্ত্রাসীদের নৃশংস উল্লাস নৃত্য দেখে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ চোখের পানি ফেলে অঝরে কেঁদেছিল এবং ঘাতকদের ধিক্কার জানিয়েছিল৷ হত্যাকারীদের বিচারের লক্ষ্যে মামলা করা হয়েছিল৷ কিন্তু বর্তমান সরকার ঘাতকদের রক্ষা করার জন্য সেই মামলা তুলে নিয়েছে৷ এ সরকার মামলা তুলে নিয়ে প্রমাণ করেছে তারা ২৮ অক্টোবরের গণহত্যার সাথে সম্পৃক্ত৷ কোন খুনীর অধিকার নেই মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার৷ দেশের জনগণ ২৮ অক্টোবর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এবং গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত খুনীদের বিচার করবে ইনশাআল্লাহ৷
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের খুনীদের শাসত্মির দাবীতে অ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সারা দেশব্যাপী শানত্মিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়৷ ঘোষিত এ কর্মসূচি শানত্মিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখার প্রতি আহ্বান জানান ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান ৷এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সহকারী সেক্রেটারী মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন ২৮শে অক্টোবরের শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না৷ তাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ৷
সোমবার শহীদ সাইফুল্লাহ মোঃ মাসুমের বাড়ীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন৷ শহীদ সাইফুল্লাহ মোঃ মাসুমের পিতা মোঃ মাহতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে পারিবারিকভাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিধি হিসেবে জনাব মতিউর রহমান আকন্দ বক্তব্য পেশ করেন৷ এখানে আরো উপস্থিত ছিলেন শহীদ হাফেজ গোলাম কিবরিয়া শিপনের পিতা মোঃ তাজুল ইসলাম, শিবিরের কার্যকরী পরিষদের প্রাক্তন সদস্য এবং সাবেক আনত্মর্জাতিক ও গবেষণা বিষয়ক সম্পদক জনাব এইচ এম জোবায়ের, ঢাকা মহানগরী পূর্ব এর শিবিরের সেক্রেটারী মুনিরম্নজ্জামান শামীম, শিবির নেতা রেজাউল করিম সহ পরিবারের সদস্য বৃন্দ৷
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ২৮শে অক্টোবর’০৬ পল্টন মোড়ে শহীদ হাফেজ গোলাম কিবরিয়া শিপনকে অত্যনত্ম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়৷ তার মাথা থেতলে দেয়া হয়েছিল৷ ঘটনা স্থলেই তিনি শাহাদত বরণ করেন৷
শহীদ সাইফুল্লাহ মোঃ মাসুমকে আওয়ামী খুনীরা মাথায় আঘাত করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন৷ ৭ দিন আইসিইউতে অজ্ঞান অবস্থায় থাকার পর দুনিয়া ছেড়ে মহান আলস্নাহর দরবারে চলে যান৷ তারা উভয়েই বাবা-মার প্রিয় সনত্মান ছিলেন৷ ২৮শে অক্টোবর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে শহীদ মুজাহিদুল ইসলাম, শহীদ জসিম উদ্দিন, শহীদ হাবিবুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল সহ পল্টনে ৬ জন শিবির নেতাকে নৃশংসভবে হত্যা করেছিল৷ এ হত্যা কান্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল৷ বর্তমান জালেম সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ মামলা তুলে নেয়৷ দেশের জনগণ এ মানবতা বিরোধী নির্মম গণহত্যার বিচার চায়৷
তিনি আরো বলেন, হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনকে কখনো দমন করা যায় না৷ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদেশে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হবে ইনশাআলস্নাহ৷এর আগে শহীদ সাইফুল্লাহ মোঃ মাসুমের পিতা মোঃ মাহাতাব উদ্দিন এবং শহীদ গোলাম গোলাম কিবরিয়া শিপনের পিতা মোঃ তাজুল ইসলাম ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়ে তিনি শহীদদের কবর যিয়ারত করেন৷