বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত তরুণরা ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘ক্লাইমেট হোপ বাংলাদেশ ২০২৫’ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় উদ্ভাবনামূলক চিন্তা, স্থায়ীত্বশীলতা এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে নতুন অঙ্গীকার ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আয়োজিত এই দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে এক হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী বিভিন্ন সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে ছিল জাতীয় ক্লাইমেট সায়েন্স অলিম্পিয়াড, ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা এবং ক্লাইমেট হ্যাকাথন। এই সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইয়ুথনেট গ্লোবাল, বুয়েট এনভায়রনমেন্ট ওয়াচ এবং গ্লোবাল ইয়ুথ চেঞ্জমেকারস।
অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরছেন না, বরং টেকসই সমাধানের পথ খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছেন। আয়োজকদের মতে, জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তরুণরা আজ হতাশা থেকে বেরিয়ে আশার আলোতে তাদের ভবিষ্যত গড়ে তুলছে।
সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) জাতিসংঘ উইংয়ের প্রধান এ.কে.এম সোহেল। তিনি বলেন, “আজকের তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও নেতৃত্ব ভবিষ্যতের নিরাপদ পৃথিবী গড়তে অপরিহার্য।”
ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের ‘জেনারেশন হোপ’ ক্যাম্পেইনের চ্যাম্পিয়ন সোহানুর রহমান বলেন, “তরুণরা কেবল আগামী দিনের নেত্রী নয়, তারা আজকের পরিবর্তনকারী। একসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ ভবিষ্যতের গল্প নতুন করে লিখছি, যেখানে রয়েছে আশার আলো, উদ্ভাবনা এবং জলবায়ু ন্যায়তা।”
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশনের গ্রিন ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট টিম লিডার এডউইন কোয়েকুক, সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব কো-অপারেশন নায়োকা মার্তিনেজ ব্যাকস্ট্রোম, এবং বুয়েট এনভায়রনমেন্ট ওয়াচের মডারেটর অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান।
“আমরা এখানে শুধু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে আসিনি, আমরা সমাধানের পথ খুঁজতে এসেছি,” বলেছিলেন বিজয়ী ভিকারুননিসা নূন স্কুলের জাইফা রহমান রুহি।
সম্মেলনের সমাপ্তি লগ্নে ৬০০ প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে ১৩টি ক্যাটাগরিতে ১০৩ জন বিজয়ীকে সনদ এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পুরস্কারের অনুষ্ঠান ছিল আনন্দ এবং গর্বে পরিপূর্ণ, যেখানে তরুণরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশের জলবায়ু আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী এবং টেকসই ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে।