আবারো কখনো কখনো ফ্যাসিবাদের আওয়াজ শুনতে পাই, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘কোনোভাবে যদি ফ্যাসিবাদের আওয়াজ আবার বাংলাদেশে ওঠে তাহলে জাহিদের আত্মার কাছে আমরা কী জবাব দেবো? আহনাফ, আবু সাঈদ, ওসমান গণির আত্মার কাছে কী জবাব দেবো? জবাব আমরা দিতে পারব না! যাদের কারণে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা আজো কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে? যারা ফ্যাসিবাদকে স্থায়ীত্ব দেয়ার জন্য কাজ করে গেছেন তাদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি।’
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমাদের ক্রান্তিকাল এখনো শেষ হয়নি। মোটামুটি একটা স্বস্তির মধ্যে থাকলেও এখনো ৬০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে থাকা মামলা থেকে অব্যাহতি পায়নি। এখনো কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না? শেখ হাসিনার দোসরদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ করছেন, সেখানে প্রশাসন নিয়োগ দেন। চালু রাখেন বা টেকওভার করেন। যাতে শ্রমিক-কর্মচারীরা ছাঁটাই না হয়।’
তিনি বলেন, ‘আজো কেন বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার করা হয়নি? উনি গণতন্ত্রের ধারা বন্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন? দেশী ও বিদেশী গণতন্ত্রবিরোধী চক্রান্তে সুপরিকল্পিতভাবে খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের আইন থাকলেও গণতন্ত্র একটা স্পেস পেতো। জুলাই গণহত্যায় তিনিই প্রধান ও সবচেয়ে বড় দায়ী। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য তারা সুযোগ করে দিয়ে গেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিচারপতি আসাদুজাম্মান মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সাজা দিলেন। এরপর হাইকোর্টের আরেকজন বিচারপতি এনায়েত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করলেন। এরা কেন আজো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এরাই গণতন্ত্রহত্যাকারী, শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ কায়েমের হাতকে শক্তিশালী করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশন কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ, কে এম নুরুল হুদা- কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? এরাই তো হচ্ছে নির্বাচন ধ্বংসকারী। নূন্যতম শহীদের মর্যাদা দিতে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকুক না কেন এই সমস্ত গণতন্ত্রবিনাশী দানবদের গ্রেফতার করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। সেই উদ্যোগ এই দেশবাসী দেখতে চায়।’
রিজভী বলেন, ‘এখনো তো আদালত, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর কারো কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তাহলে মূল অপরাধীরা কেন আজো বাইরে? গত ১৬ বছর শেখ হাসিনার মতো রক্তপিসাসু নারী যিনি ছোট বাচ্চাদের গুলি করে হত্যা করতে দ্বিধা করেনি, তাকে যারা সহায়তা করেছে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন? এটা হতে পারে না।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদ-এর ক্যানসার আক্রান্ত ছোট ভাই মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।