গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে। এই উপদেষ্টা পরিষদের কয়জন গত ১৬ বছরে ১৬ দিন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে ছিলেন, আওয়াজ দিয়েছিলেন। আপনারা দেখান, আছে? নাই।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ফলে রাজনীতিবিদদের প্রতি মানুষের ঘৃণা-অবিশ্বাস-সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে রাজনীতিবিদরা আসলে ভালো কিছু করতে পারবে না। তবে বাস্তবতাও মনে রাখতে হবে, একটা অরাজনৈতিক সরকার বেশিদিন থাকলেও সেদেশেও নানা সংকট তৈরি হয়। গৃহযুদ্ধ, আভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ—এ বিষয়গুলো মেমোরিতে নিতে হবে। আমরা বলছি, নির্বাচন হবে। অবশ্যই নির্বাচনে আগে সংস্কার হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তার-বিচার, বিচারপূর্বক আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে’ সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে জুলাই মঞ্চ। এতে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর আরও বলেন, সরকারকে বলতে চাই, ছাত্রলীগকে যেভাবে নিষিদ্ধ করেছেন, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগের অন্তত বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপরে নির্বাহী নিষিধাজ্ঞা দিতে পারেন। এরপর যদি বিচারিক প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমাবেশে শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা গোলাম রহমান বলেন, আমার ছেলে ভালো রেজাল্ট করে বনানী নৌবাহিনীর কলেজের প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু ৪ আগস্ট চারটায় ফার্মগেটে পুলিশের গুলিতে সে শাহাদাত বরণ করে। আমরা আজ সব হারিয়ে নিঃস্ব। এ সরকারের সময়ে যদি শহীদদের বিচার না হয়, তাহলে কোন সরকারের সময় বিচার পাব আমরা জানি না। প্রধান উপদেষ্টারকে অনুরোধ করি, এ সরকারের সময় বিচার না হলে জাতি আপনাদের ছাড়বে না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের মিটিং মিছিল বন্ধ করতে হবে। যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করবে, তাদের খুঁজে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আপনারা দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে যান যেন আর কোনো দল এমন আচরণ করতে না পারে।
শাহরিয়ার আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেন, গত আগস্টের চার তারিখ মিরপুর আমার ছেলে শহীদ হয়। আমার একমাত্র ছেলে। আজকে আট মাস হয়ে গেল, বিচারের ন্যূনতম চিত্র দেখছি না। বিচারের নামে প্রহসন চলতেছে। ট্রাইব্যুনালকে রঙ্গমঞ্চ করে রাখা হয়েছে, তারা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও গ্রেপ্তার হয় না।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ, লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব শরাফত হোসেন, জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, শাহবাগ থানা জামায়াতের আমির শাহ মুহাম্মদ মাহফুজুল হক, রোড টু রিফর্মের তামজীদ হোসেনসহ শহীদ পরিবার এবং আহতরা।