আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো: কামরুল ইসলাম, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ পাঁচ প্রভাবশালী নেতা ও এক সামরিক কর্মকর্তাকে গাজীপুরের তিনটি হত্যাকাণ্ডের মামলায় আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আদালতে তোলা হলে তাদের লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেছে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক মো: ওমর হায়দার এ আদেশ দেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মহানগরের গাছা এলাকায় তিনটি হত্যাকণ্ডে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মজুমদার ও জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান জিয়াউল আহসান।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতায় তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হন।
এদিন সকাল থেকেই আসামিদের আদালতে হাজিরাকে ঘিরে গাজীপুর আদালতপাড়া ছিল কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন করা হয় সেখানে। আসামিদের কাশিমপুর ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দু’টি প্রিজনভ্যানে করে আনা হয়। তাদের সবাইকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে আদালতের এজলাসে হাজির করা হয়।
আদালত চত্বর ঘিরে থাকা নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে স্থানীয় বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে মিছিল থেকে অভিযুক্তদের লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করা হয়। এসময় আদালত এলাকায় পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়। বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ‘জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের এখনো উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত হয়নি।’
তারা এ ঘটনার দ্রুত বিচার এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ডা. দীপু মনি, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও সাধন চন্দ্র মজুমদারকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিয়াউল আহসান ও নজরুল ইসলাম মজুমদারকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, মামলাগুলোর তদন্ত প্রায় সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে চার্জ গঠনের জন্য পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়।