. জেনারেল (অব.) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর নেতৃত্বে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা-আমলাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপিতে যোগ দিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এলডিপিতে যোগ দেন তারা। এ সময় এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.) তাদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অলি আহমদ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কি দেশের জন্য কাজ করছেন, নাকি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য অপেক্ষা করছেন? প্রায় ৯ মাস ক্ষমতায় আছেন। মনে হচ্ছে, ক্ষমতা ভোগ করছেন। জনগণের সমস্যা নিরসনে উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। বর্তমানে ফ্রিস্টাইলে দেশ চলছে। ফলে দাবি-দাওয়ার শেষ নেই। বিনা কারণে যখন তখন মিছিল হচ্ছে, রাস্তা অবরোধ এবং সর্বত্র বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জনগণের ভোগান্তি চরমে।
চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের সাবেক কমান্ড্যান্ট ছিলেন। আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রাইন কমান্ডের (এআরটিডিওসি) জিওসি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সাভারে রানা প্লাজার উদ্ধার অভিযান পরিচালনার সময় সারা দেশে ব্যাপক পরিচিতি পান সারওয়ার্দী। দায়িত্ব পালন করেছেন পদাতিক ডিভিশনসহ সেনাসদরের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, বাংলাদেশ রাইফেলসের পরিচালক অপারেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
যোগদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। অলি আহমদ বলেন, কিছু কিছু জায়গায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের ভারতের দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত হবে না বা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়াও সঠিক হবে না। সাবধান ও হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, দেশ রক্তপাতের দিকে এগোচ্ছে। হয়তো আপনাদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। পাপ কিন্তু বাপকেও ছাড়ে না। সুতরাং সময় থাকতেই সঠিক পদক্ষেপ নেন। জনগণকে শান্তিতে, স্বস্তিতে বসবাস করতে দিন। চাকরি হয়তো দিতে পারলেন না, কিন্তু শান্তির প্রয়োজন। শুধু মিষ্টি কথায় ভাষণ দিয়ে দেশ চালানো যাবে না, জনগণের সমস্যার সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে সমাজের কী অবস্থা তা জানা উচিত। অনেকে অবৈধ টাকার কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছে। বিভিন্ন তদবিরের জন্য সারাদিন সচিবালয়ে সময় কাটাচ্ছে। রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করেছে। অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছে। নিজেদের জন্য আলিশান অফিস ভাড়া নিচ্ছে। এই অবস্থায় জনগণ চুপ থাকলে দেশের সর্বনাশ হবে।
অলি বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার দোসররা ঝটিকা মিছিল করে দেশকে অস্থিতিশীল করছে। বিভিন্ন জায়গায় হত্যা ও ডাকাতি করছে। সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু জনগণ মনে করে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সরকারের ইন্ধন রয়েছে।