মনির হোসেন, বেনাপোল: বৈশ্বিক মন্দা আর আমদানির রাশ টানার পরও যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকার শুল্কহার বাড়ানো এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে পণ্যছাড় কার্যক্রম হবার কারণে রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানায়, ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয় তার উপর প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমানে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৫ হাজার ১০৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছিল ৬ হাজার ১৬৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দাম ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কয়েক বছর ধরে এলসির সংখ্যা কমিয়েছেন। এতে আমদানি কমায় গত কয়েক বছর রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। তবে গত বছর থেকে রাজস্ব আদায় বাড়তে শুরু করেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি বেড়েছে। শিল্প কারখানার পণ্য আসতে শুরু করেছে। যেকারণে বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বর্তমান সময়ে ডলার সংকট কেটে যাবার কারণে এলসির পরিমান বেড়েছে। যেকারণে আমদানি বৃদ্ধি পাবার কারণে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। আবার সরকার হঠাৎ বিভিন্ন পণ্য আমদানি শুল্ক বাড়ানোর কারণে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি করা হয়েছিল ২৬ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। ২০১৯-২১ অর্থবছরে পন্য আমদানি করা হয়েছিল ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪ মেট্রিক টণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পন্য আমদানি করা হয় ২০ লাখ ১১ হাজার ৬ মেট্রিক টন পন্য।
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, চলতি অর্থবছরে উচ্চ শুল্কের মালামাল বেনাপোল দিয়ে এসেছে। এতে করে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল হাসান জানান, গত ৪-৫ মাস ধরে ডলার সংকট নেই। ব্যবসায়ীরা এলসি করতে পারছেন। এতে করে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা দ্রুততার সাথে পণ্য ছাড়করণের পাশাপাশি সরকার শুল্কহার বাড়ানোয় আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।