ক্যারিবীয় দেশ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী সান্তো ডোমিঙ্গোয় একটি নাইট ক্লাবের ছাদ ধসে অন্তত ৬৬ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন আরো অসংখ্য মানুষ। এখনও উদ্ধারকাজ চলছে বলে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স।
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের (সিওই) পরিচালক হুয়ান ম্যানুয়েল মেন্ডিজ রয়টার্সকে বলেন, ৬৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত ব্যক্তির সংখ্যা শতাধিক হতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা থাকবে, ততক্ষণ কাজ করে যাবেন তারা।
সরেজমিনে জেট সেট নামের নাইট ক্লাবে দেখা যায়, নাইট ক্লাবটির ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া মানুষের আর্তচিৎকার ভেসে আসছে। তাদের উদ্ধারে নেমেছেন প্রায় ৪০০ উদ্ধারকারী। কয়েক ডজন অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেকেই পরিচিতজনের খোঁজে অপেক্ষা করছেন। তাদের একজন দেশটির জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রুবি পেরেজ।
হাসপাতালের জরুরি অপারেশন কেন্দ্রের পরিচালক জুয়ান ম্যানুয়েল মেন্দেজ বলেছেন, ১৫৫ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, নাইট ক্লাবের মঞ্চে ছিলেন রুবি পেরেজ। হঠাৎ করে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর ছাদ ধসে পড়ে। ৬৯ বছর বয়সী পেরেজের ব্যবস্থাপক এনরিক পাউলিনো সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ করেই এটা হয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম ভূমিকম্প হচ্ছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার সময় নৈশ ক্লাবটিতে ৫০০ থেকে ১ হাজারের মতো মানুষ ছিলেন। তবে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাদ ধসের সময় জেট সেট নামের নাইট ক্লাবটির ভেতর প্রায় ৩০০ জন ছিলেন।
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদেরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দেশটির মন্টে ক্রিস্টি মিউনিসিপ্যালটির গভর্নর নেলসি ক্রজ রয়েছেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
নাইট ক্লাবটির ছাদ কীভাবে ধসে পড়ল সেটি এখনো জানা যায়নি। ড্রোন থেকে নেয়া ফুটেজে দেখা গেছে, ক্লাবটির ছাদের মাঝের অংশ ধসে গর্ত তৈরি হয়েছে। সেখানেই মূলত সবাই ছিলেন।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ব্যান্ডদল গান পরিবেশন করছে। ওই সময় স্টেজের কাছ থেকে একজনকে আঙুল দিয়ে দেখান যে ক্লাবের পেছনে কিছু একটা পড়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ছাদে থাকা লাইটগুলো ধসে পড়তে থাকে। এরপর মুহূর্তের মধ্যে পুরো ছাদটি ধসে পড়ে। ওই সময় মানুষের গোঙানি ও আত্মচিৎকার শোনা যায়। এর কয়েক সেকেন্ড পর ভিডিওটি কালো হয়ে যায়।