প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, দেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। একই সঙ্গে বহুল আলোচিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কাজ করতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে দেশটি।

রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

ড. খলিলুর রহমান বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ৫০টি চমৎকার বর্ষ অতিক্রম করেছি। আগামী ৫০ বছর কেমন করে আমরা আমাদের দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তুলব তার একটি শক্ত ভিত্তি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং তৈরি করে দিয়েছেন। তার একটি দিক হচ্ছে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং অন্য দিকটা হচ্ছে শিল্পায়ন। এই দুটি স্তম্ভ তারা শক্ত করে প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গেছেন। এগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ হচ্ছে দুই দেশের মানুষের। তার একটি প্রধান বিষয় হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক।

প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বলেছেন, আমরা এক-দুজন নয় বরং হাজার হাজার বাংলাদেশি চাইছি যারা চীনে শিক্ষা নিতে যাবেন। আগামী এপ্রিল মাসে কুনমিং শহরের গভর্নর আসছেন। ওই সফরে শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আমরা চাইছি যেন, বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী চীনে শিক্ষার সুযোগ লাভ করতে পারেন। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।

একইসঙ্গে দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ এবং শিক্ষার প্রসারের জন্য ঢাকা এবং চীনে দুটি কালচারাল সেন্টার স্থাপন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এসময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত বুধবর (২৬ মার্চ) চার দিনের সরকারি সফরে চীনে পৌঁছান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। শির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও একটি ‘ইনভেস্টমেন্ট ডায়ালগে’ যোগ দেন।

তার এই সফরে চীনের হাইনান প্রদেশে আয়োজিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে ভাষণ দেন ড. ইউনূস। এ সম্মেলনের ফাঁকে বেশ কয়েকটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

সবশেষ শনিবার সকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেয় দেশটির পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া তিনি ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। পরে চীনের স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ৫৭ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি চুক্তি ও ৮টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ চীন সরকার ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ, অনুদান ও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে।