“ধান উৎপাদনে বড় মৌসুম হলো বোরো আবাদ,, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পরেছেন বোরো আবাদে। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে গেলেই মহালছড়িতে শুরু হয় বোরো আবাদ। কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এই জমি গুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রতি বছর জুন-জুলাই মাসে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পায়। পানি কমে গেলে তারপর শুরু হয় বোরো আবাদ। পানি কমে গেলেই চাষীদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। কাজের লোক (দিন মজুর) না পাওয়ায় সময়মত বোরো আবাদ করতে পারবে কিনা এই নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মহালছড়ি সদরের ছৌংড়াছড়ি মুখ, মহাজন পাড়া, ভুয়াততে পাড়া, ২নং মুবাছড়ি ইউনিয়নে ব্রীজপাড়া, মোহামনিপাড়া, হ্যাডম্যানপাড়া মনাটেক, মেশিনপাড়া, খুল্যাংপাড়া, বাঘমারা, হ্যোয়্যাংছা পাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বোরো আবাদ শুরু করে দিয়েছে কৃষকরা।
মুবাছড়ি ইউনিয়নয়ের ইউপি সদস্য চিকু চাকমা(৪০) বলেন, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস আসলে কাপ্তাই হৃদের পানি কমে গেলে জমি চাষযোগ্য করে তারপর ধান রোপন করতে হয়। এই বছরে দিন মজুরির (কামলা) খরচটা একটু বেশি। পুরুষদের ৬০০ ও মহিলাদের ৪০০ টাকা করে দিনে দিতে হয়। আর বিঘা প্রতি রোপন করতে দিলে এক বিঘা ৩৫০০ শত টাকা লাগছে। টাকা দিয়েও সময়মত দিন মজুর পাওয়া যাচ্ছে না। সময়মত আবাদ করতে পারবো কিনা এই নিয়ে চিন্তায় আছি।
গ্রামের এক দিন মজুরি মিলি চাকমা (ইমন মা) বলেন আমাদের গ্রুপে ১৩ জন সদস্য আছে। দিন মজুরি হিসেবে কাজ করি এবং বিঘা প্রতি হিসেবে ধান রোপন করে থাকি। নিজেদের জমি গুলো চাষ করতে আমরা একে অপরকে সাহায্য করে থাকি। দিন মজুরি হিসেবে কাজ করলে দিনে ৪০০ টাকা আর বিঘা প্রতি নিচ্ছি ৩৫০০ টাকা।
মনাটেক গ্রামের অটুল চাকমা(৪৩) বলেন, আমি ৬ বিঘা বোরো আবাদ ধান রোপণ করেতেছি। বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ফসলের উপর আমাদের নির্ভর করতে হয় । পুরো বছরের খাদ্যের যোগান এবং ফসল যদি সঠিক সময়ে ঘরে তুলতে পারি তাহলে ছেলে মেয়েদের লেখা-পড়া খরচসহ পুরো বছরের খাদ্যের যোগান হয়ে যাবে।
মহালছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা মোঃ নুর মোহাম্মদ রসুল( ৫০) জানান বোরো ধানের চারা রোপনের সময়ে সাধারণত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ই জানুয়ারী মধ্যে। এই সময় চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। ৩০ থেকে ৪০ দিনের বয়সী চারা রোপন করতে হবে। সঠিক বয়সের চারা রোপন করলে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া সম্ভব। চলতি বোরো মৌসুমে ১৩৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাইব্রিড ৯৫০ হেক্টর ও উফশী ৩৮০হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।