পাহাড়ের হিমেল বাতাস ও কনকনে শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়। তাপমাত্রা নেমেছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে। মৌসুমের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের শীতবস্ত্রের অভাবে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র থেকে নিম্ন আয়ের মানুষ। অগ্রহায়ণেই ঝেঁকে বসা শীতে বিপাকে মানুষ।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাতাসে তাপমাত্রা সাধারণত ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে এবং ৮ ডিগ্রির ওপরে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে এলে মাঝারি ও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হয়ে থাকে।

সকালে আবহাওয়ার তথ্যটি জানিয়েছে জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়।

ভোরেই হালকা কুয়াশা ভেদ করে দেখা গেছে সূর্য। গত দিনের তুলনায় ঘন কুয়াশা না থাকলেও কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তর জনপদের মানুষ। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরেছে বরফ শিশির। শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে কাজে বেরিয়ে পড়েছেন দিনমজুর, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, কৃষক থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ। এদিকে গতকাল রাতে শীতের কারণে হাটবাজারগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কমে যেতে দেখা যায়। কাগজের কাটন, শুকনো কাঠখড়ি জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে মনে হয়েছে তাপমাত্রা জিরোতে নেমে এসেছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় হাড় পর্যন্ত কেঁপেছে। সন্ধ্যার পর শীতের প্রকোপ একটু বেশি থাকছে। একইসঙ্গে পাহাড়ের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ। সন্ধ্যার পর থেকেই গরম কাপড় পরে চলাফেরা করছে মানুষ। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে।

ভ্যানচালক বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে যখন ভ্যানে যাত্রী নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম, মনে হচ্ছিল কনকনে ঠাণ্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসছিল। শরীরে তিন-চারটা গরম কাপড় পড়েও শিরশির করে শীত কাটার মতো লাগছিল। সন্ধ্যার পর কিংবা সকালে যাত্রী তেমন পাওয়া যায় না। শীতের কারণে ভ্যান ঠিকভাবে চালানো যায় না। ফলে উপার্জন কমে গেছে।

করিম বলেন, রাতে ও ভোরে প্রচণ্ড ঠান্ডা লাগছে। আমাদের মতো বয়স্করা পড়েছি বিপাকে। ঠাণ্ডায় জ্বর, সর্দি, কাঁসি লেগেই থাকছে।

রাজেস চাষি বলেন, আমরা অনেক কপি লাগানো। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে খেতে টাটকা সবজি তুলতে গেলে হাতপা অবশ হয়ে আসে। প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে আজ।

কয়েকজন গৃহিণী জানান, রাতে বিছানা থেকে শুরু করে ঘরের ফ্লোর, বালতিতে রাখা পানি বরফ হয়ে ওঠে। ভোরে উঠে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।