২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জে (বর্তমান উপদেষ্টা) পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এর স্বামী আবু বক্কর সাদা পোশাকের অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দ্বারা অপহৃত হন। কতিপয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কতৃক পরিবেশ ধ্বংসকারী নানান কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রিজওয়ানা হাসান সোচ্চার ছিলেন। জাতিসংঘসহ দেশী বিদেশী বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সোচ্চার প্রতিবাদ ও দাবির প্রেক্ষিতে তার স্বামী ছাড়া পান। এই পুরো ঘটনায় অভিযোগের তীর ছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম এর প্রতি। সে সময় রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এ ব্যাপারে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পরবর্তীতে এই বিতর্কিত নুরুল ইসলাম ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান। আওয়ামী লীগের আমলে একজন প্রকৃত দলকানা পুলিশ অফিসারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ ছিলো সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

ক্রিকেট সংশ্লিষ্টতা:
বিগত মার্চ মাসের টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের সত্ব পলাতক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের দুবাই ভিত্তিক কোম্পানি TSM FZE এর কব্জায় আসে। এর সাথে সাথে তারা নারী টি২০ বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২০২৫ এর সত্বও লাভ করে। অভিযোগ এই সরকারের বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে বিপুল অংকের টাকা পাঠিয়ে এই সত্ব গুলো কেনা হয়। নুরুলের অবৈধ আয়ের টাকায় এই খেলাগুলো বিগত সরকারের সময়ে অগ্রিম দিয়ে কেনা হয়।

এছাড়া বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুঠিতব্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ এর সিরিজটি একই ভাবে TSM অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে কিনে নাগরিক টিভি, টি স্পোর্টস ও টফি অ্যাপ এ বিক্রি করেছে। এক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি হয়েছে বলে জানা যায়।

বিদেশী নাগরিকত্ব ও দুবাইতে বিশাল বিনিয়োগ:
TSM কোম্পানিটি দেশে ডিআইজি নুরুলের সম্বন্ধি মইনুল হক চৌধুরীর নামে নিবন্ধিত। মইনুল এর মাধ্যমে সেন্ট কিটস এর নাগরিকত্বও কিনে নেন এই পলাতক ডিআইজি নুরুল। তার মাধ্যমে ডিআইজি নুরুল দুবাইতে তার অবৈধ আয়ের টাকায় আবাসন ও হোটেল খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। জানা যায়, এই মইনুল হোক চৌধুরী পলাতক ডিআইজি সহ আরো কয়েকজন সাবেক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার হয়ে Business Bay, silicon valley, Dubai Greens সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রায় দুই ডজন কমার্শিয়াল স্পেস ও আবাসিক ফ্ল্যাট কিনে দেন এবং সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করেন বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে।

জুলাই আগষ্ট গণহত্যার সময়ে ঢাকা জেলার সবগুলো থানার দায়িত্ব ছিলো ডিআইজি নুরুল ইসলামের অধীনে। ৫ই আগষ্টের পর থেকে নুরুল পলাতক আছেন। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। কিন্তু দেশে তার অবৈধ ক্রিকেট ব্যবসা তার আরেক নিকট আত্মীয় মাহবুব আলমের নামে এখনও বহাল তবিয়তে চলছে।