গাজীপুরে বকেয়া বেতন না পেয়ে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা সোমবার সকাল হতে ফের চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে। বিকেলে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা পাশর্^বর্তী গ্রামীণ ফেব্রিক্স কারাখানার গেইট ভাংচুরের চেষ্টা চালায় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তারা সেনাবাহিনীর একটি জীপ গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে। সন্ধ্যা ৬টায় এ সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান করছিল।
পুলিশ, শ্রমিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের সারাবো এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা রয়েছে। কারখানাগুলোতে ৪০ হাজারের অধিক শ্রমিক রয়েছে। এ পার্কের শ্রমিকদের প্রতিমাসের বেতন দেয়া হতো পরের মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরের কয়েক মাস নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। এসময় শ্রমিকরা আন্দোলন করে তাদের বেতন আদায় করে আসছিল। সর্বশেষ গত অক্টোবর মাসের বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ^াস দিয়েও ওই বকেয়া বেতন পরিশোধ করেনি। একপর্যায়ে শ্রমিকরা সাপ্তাহিক ছুটিরদিন শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বাদে ১৪ নভেম্বর হতে ২০ নভেম্বর (বৃহষ্পতিবার) প্রতিদিন সকাল হতে রাত পর্যন্ত চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। শ্রমিক আন্দোলনের একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের মোবাইল একাউন্টে বেতন পরিশোধ করা শুরু করে কর্তৃপক্ষ। পরে ওই দিন রাত ৮টার দিকে সড়কের অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
এদিকে সব শ্রমিকরা বকেয়া বেতন না পেয়ে ফের রবিবার বিকেলে ফের আন্দোলনে নেমে ওই মহাসড়ক অবরোধ করে। কয়েক ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ শেষে রাতে বাড়ি ফিরে যায় তারা। সোমবার সকালে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে সোয়া ৮টার দিকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ফের অবরোধ করে। এতে ওই মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের উভয়দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে অবরোধকারীদের সড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। একপর্যায়ে বিকেল ৪টার দিকে তারা পাশ^বর্তী তেঁতুইবাড়ি এলাকার গ্রামীণ ফেব্রিক্স কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের তাদের আন্দোলনে যোগ দিতে আহবান জানায়। এতে সাড়া না পেয়ে তারা ওই কারখানার গেইট ভাংচুরের চেষ্টা চালায় এবং ইট পাটকেল ছুড়ে। এসময় বাঁধা দেয়ায় শ্রমিকরা সেনাবাহিনীর একটি জীপ গাড়ির কাঁচ (লুকিং ও পেছনের) ভাংচুর করে।
জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে ১০ শতাংশের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়েছিল। বাকি শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন না পেয়ে সোমবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করে। বিকেলে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা স্থানীয় গ্রামীণ ফেব্রিক্স কারখানার গেইট ভাংচুরের চেষ্টা চালায় এবং কারখানায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তারা সেনাবাহিনীর একটি জিপ গাড়ির লুকিং ও পেছনের কাচ ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) মহাসড়কে অবস্থান করছে। তবে কৃর্তৃপক্ষ তাদের বেতন পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।