যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেন যদি রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানে, এর জবাবে তারাও যথাযথ পদক্ষেপ নিবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ায় এই ধরনের হামলা ‘যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানোর শামিল হবে।’

যদিও নির্বাচনের আগে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। তবুও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি রাশিয়ার অভ্যন্তরে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন। তবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে বাইডেনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখবেন কি না, তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

এদিকে ইউক্রেন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এটিএসিএমএস (আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম) ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে, যার পাল্লা প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে একই গতি সম্পন্ন ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্রও তাদের হাতে রয়েছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে এতদিন ইউক্রেন এইসব ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহার করেনি।

আজ মঙ্গলবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক হাজারতম দিন পূর্ণ হবে। এমন দিনে মি. বাইডেন ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় মনে করা হচ্ছে, যুদ্ধ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকে পৌঁছেছে।

সম্প্রতি রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়া দশ হাজারের বেশি সেনা পাঠিয়েছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া আরও এক লাখ সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়াকে সরবরাহ করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এই নতুন অস্ত্র চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নাও আসতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রই নিজের ভাষায় কথা বলবে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন গত সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, ‘ইউক্রেন যদি এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, তবে তা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের সমতুল্য হবে।’

এদিকে গতকাল সোমবার পুতিনের মুখপাত্র বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখানে আগুনে ঘি ঢালছে।’

তবে মার্কিন ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফাইনার বলেছেন, ‘রাশিয়াকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উপস্থিতি এবং ইউক্রেনের অবকাঠামোয় রাশিয়ার বড় ধরনের হামলার জবাবেআমরা এর প্রতিক্রিয়া জানাবো। বিশেষ করে ।’

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ইউক্রেনে তীব্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তাতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে এবং বড় ধরনের ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে। এতে কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন।

গতকাল সোমবারেও ওডেসায় রাশিয়ার হামলায় আরও ১০ জন নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মি. বাইডেনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি যুদ্ধে জড়ানো বন্ধ করবেন এবং করদাতাদের অর্থ আমেরিকানদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করবেন।

তিনি বলেছেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন। তবে তিনি কিভাবে তা করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।’

যুদ্ধ বন্ধ প্রসঙ্গে সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘মি. ট্রাম্প ইউক্রেন ও রাশিয়াকে একটি শান্তিচুক্তিতে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন।’