ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এতে নিজাম হাজারী ছাড়াও ৬ পুলিশ কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মো. শাফায়াতের আমলি আদালতে আবেদন করলে বিচারক এ আবেদন আমলে নিয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনা সরকার পতনের পর নিজাম হাজারীর সাম্রাজ্য ভেঙে যায়। এ অবস্থায় নিজ দলের অনেকেই তাদের প্রতি নিজাম হাজারীর নির্যাতনের কথা বলার সাহস পাচ্ছেন।
যুবলীগ নেতা নির্যাতন, হত্যার চেষ্টা, ভাঙচুর ও লুটপাটের এ মামলায় অপর শীর্ষ আসামিরা হলেন জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার, এসপি (ডিএসবি) আমিনুল ইসলাম, ফেনী মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ, জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ খাঁন চৌধুরী, এসআই নজরুল ইসলাম, এসআই মাহবুবুর রহমান, ঢাকাস্থ ফেনী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আবদল্লাহ।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ফেনী পৌরসভার দুইবারের সাবেক কমিশনার ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা শাখাওয়াত হোসেন নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন। মামলাটি সে সময় সারা দেশে খুবই আলোচিত হয়।
অস্ত্র ও ডাকাতির মামলায় নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে কম সাজা খেটে জালিয়তির মাধ্যমে জেল থেকে বের হয়ে বিনা ভোটে অবৈধভাবে এমপি হওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেছিলেন শাখাওয়াত।
এ ঘটনায় নিজাম হাজারী ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ পুলিশের সহযোগিতায় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শাখাওয়াতের বাড়িতে আক্রমণ ও প্রায় বিশ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট শেষে তাকে মর্মান্তিকভাবে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
একই দিন গভীর রাতে শাখাওয়াতকে ফেনী সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে বাড়ি থেকে অপহরণ করে মহিপালের অজ্ঞাত একটি স্থানে আটক করে রাতভর নির্যাতন করে।
সেদিন রাতে ফেনী পুলিশ বাদীকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী মডেল থানায় নিয়ে আসে। মধ্যরাতে তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নির্দেশে এএসপি আমিনুল ইসলাম বাদীর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।
এ সময় এসআই নজরুল ইসলাম নির্যাতনের ভিডিওচিত্র নিজাম হাজারীকে দেখাতে থাকেন। এ সময় নিজাম হাজারী বাদীকে ক্রয়ফায়ারে দেওয়ার কথা বলে।
বাদী শাখাওয়াত মামলার এজাহারে জানান, পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা শেষে এএসপি আমিনুল ইসলাম ক্রসফায়ার থেকে বাঁচতে হলে তাকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেন।
পরে তার পরিবারের লোকজন ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করলেও পুলিশ তাকে বিএনপির করা গাড়ি পোড়ানোর মামলাসহ ৩টি মিথ্যা মামলায় চালান করে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালামউদ্দিন শিমুল ও মোহাম্মদ শহীদ উল্যাহ জানান, বিচারক আমাদের মক্কেলের আবেদন আমলে নিয়ে ডজনখানেক আইনজীবীর বক্তব্য শুনেছেন।