সেন্ট মার্টিনে কেউ কোন সামরিক ঘাঁটি করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ওই নরম ভূখণ্ডে কেউই কোন সামরিকঘাঁটি করতে পারবে না। এখন যারা সেন্ট মার্টিন নিয়ে আন্দোলন করছেন তারা হলেন জাহাজ মালিক ও হোটেল মালিক। তারা ওখানকার স্থানীয় মানুষকে উসকে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই যে পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে বলা হচ্ছে তা কিন্তু একদিনের সিদ্ধান্ত নয়। বিভিন্ন সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোই পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় আমরা সীমিত পরিসরে বিধিনিষেধ আরোপ করছি। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে সেন্ট মার্টিনে পর্যটন কার্যক্রম চলবে। কাজেই পর্যটন যে বন্ধ- এ কথাটা তো ঠিক নয়। মিথ্যা প্রচারণা।’

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জনসচেতনতা ও জীববৈচিত্র রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত করতে আমরা কাজ করছি। গত বছর সেন্ট মার্টিন বন্ধ ছিল কিছু সময়। তখন তো কেউ প্রতিবাদ করেননি। এখন এমন কথা বলা হচ্ছে যে সেন্ট মার্টিনে দুর্ভিক্ষ হবে। হীন ব্যক্তিস্বার্থে কেউ কেউ এসব বিভ্রান্তিকর কথা ছড়াচ্ছে। সেন্ট মার্টিন নিয়ে কোন বিভ্রান্তি নেই। এই বিভ্রান্তিগুলো রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

জওয়ানা হাসান জানান, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সকল সরকারি নির্মাণে পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধ করা হবে। সরকারি অফিসে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যেন নির্মাণ কাজে পোড়ানো ইট ব্যবহার না করা হয়। সরকারই হচ্ছে নির্মাণ কাজে ইটের সবচেয়ে বড় গ্রাহক। রাস্তাঘাট ও ভবন নির্মাণে সরকার ইট ব্যবহার করে থাকে। বড় বড় কাজে ইট ব্যবহার হয়ে থাকে।সরকারকে পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্যবস্থায় যেতে হবে। সরকার চাহিদাপত্র দিলেই এর সমাধান হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ ইটভাটা। এটি বন্ধের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দেশের নতুন ইটভাটার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। ৩ হাজার ৪৯১টি ইট ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে জেলাগুলোতে অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটাকে জনস্বার্থে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে ব্লক ইট তৈরির কাজে প্রয়োজনে প্রণোদনা দেবে সরকার।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন কোন ইটভাটার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। যেকোনো ফর্মেই হোক না কেন আমরা ইটভাটার অনুমোদন দিচ্ছি না। যে সমস্ত এলাকা থেকে ইটভাটার দূষণ নিয়ে অভিযোগ আসছে আমরা সেইসব এলাকার ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

তবে তিনি বলেন, ‘জিগজ্যাগ ইটভাটাতে আপাতত আমরা কোন অভিযান চালাচ্ছি না কারণ অনেকেই জিগজ্যাগ ইটভাটায় ইনভেস্ট করেছে। আমরা এসব ইটভাটার মালিকদেরকে সতর্ক করে কমিটি গঠন করে দিয়েছি যাতে তারা নিয়মনীতি মেনে ইট উৎপাদন করে। এলাকা এবং কমিটি যদি পরিদর্শনকালে কোন অনিয়ম খুঁজে পায় তাহলে এসব ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হবে।’ হবে।’