হেমন্তের ভোরে কুয়াশা উঁকি। দূর্বা ঘাসে মাকড়সার জাল। সূর্যের আলো পড়তেই চিকচিক করে উঠছে শিশিরবিন্দু। সঙ্গে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে- শীত এসেছে। শহুরে জীবনে সেভাবে না বোঝা গেলেও গ্রামীণ জনপদে শীতের আমেজটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আসছে। দেশের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানান, এরই মধ্যে উত্তরবঙ্গের লোকজন সকালের দিকে শীতের অনুভূতি পাচ্ছেন। চলতি মাসের ১৫ তারিখের পর দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পঞ্চিমাঞ্চলে শীতের অনুভূতি তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বর

এবং জানুয়ারি মাসে শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে। তবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বইবে ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারির শুরুতে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কোথাও শীতের পোশাক বিক্রি হচ্ছে, ফুটপাতে বসেছে মুখরোচক পিঠাপুলির পসরা। বাজারে মিলছে শীতকালীন সবজি। শীতের আগমনী বার্তা মিললেও এখনি জাঁকিয়ে শীত চলে আসার সম্ভাবনা নেই। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যান্য স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসতে পারে, এতে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চলতি মাস থেকে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ৮ থেকে ১০টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। এ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্ভাবাসে আরও বলা হয়েছে, শীতের পাশাপাশি শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদ-নদী অবাহিকায় মাঝারি/ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা/মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসতে পারে এবং এতে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যার ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ থেকে বৃষ্টি হতে পারে। পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে আজ রবিবার বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।