জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার রাজধানীতে বিশাল শোভাযাত্রা করবে বিএনপি। শোভাযাত্রাটি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রার রুটটি নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নয়াপল্টন-কাকরাইল মোড়-কাকরাইল মসজিদ-মৎস্যভবন-ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন-শাহবাগ-হোটেল শেরাটন-বাংলামোটর-কারওয়ান বাজার-ফার্মগেট হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে এ শোভাযাত্রা ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। এরই অংশ হিসেবে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে, দেওয়া হয়েছে নানা দিকনির্দেশনা। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এ কর্মসূচি সফল করতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে বলা হয়েছে। রাজধানীর আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কয়েকটি টিমও গঠন করা হয়েছে। বড় আকারের শোডাউনের মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করছে বিএনপি।
শোভাযাত্রা সফল করতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেনকে সমন্বয়ক করে আগেই প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেনÑ দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তারাও কর্মসূচি সফল করতে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের ভাষানী ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, স্মরণকালের সর্ববৃহৎ শোভাযাত্রা হবে। শোভাযাত্রায় বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ও ঢাকাবাসী অংশ নেবে। ঢাকা বিভাগের সব জেলা থেকেও অংশগ্রহণ থাকবে। জুমার নামাজের পর দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে সমাবেত হয়ে শোভাযাত্রাটি বিকাল ৩টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে শোভাযাত্রার সমাপ্তি হবে। তিনি আরও জানান, এ শোভাযাত্রা গণতন্ত্রের প্রতীক জাতীয় সংসদ ভবনের দিকে যাত্রা করার মাধ্যমে জনগণের অধিকার ও সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি পুনর্ব্যক্ত করতে চায়।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ৫ আগস্টের পর বড় দুটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীতে। এ সমাবেশ থেকে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে এবারের শোভাযাত্রা কর্মসূচি অনেকটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব বহন করবে। জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে রাখতে এ কর্মসূচি থেকে বার্তা দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে রাজপথে নেমে আন্দোলনের বার্তা থাকবে নেতাদের কণ্ঠে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। তবে কর্মসূচিটি একদিন পিছিয়ে ছুটির দিনে আয়োজন করা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কম হয়। দীর্ঘ ১৭ বছরের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নয়াপল্টন থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে বিজয় উল্লাস করতে পারবেন নেতাকর্মীরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিটি সাধারণ মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হবে। মহানগরের উত্তরের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে নির্দেশনা মেনে ঢাকা জেলার নেতাকর্মী, সমর্থকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। তারা বার্তা দেবেনÑ গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে দেশবাসী আছেন। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র হলে আবার রাজপথে নামবেন তারা