গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের ছয়টি কারখানার ২৩৯ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ছাঁটাই করা ওই শ্রমিকদের তালিকা কারখানার ফটকে টানিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে শ্রমিক আন্দোলনের মুখে গত ৩ নভেম্বর থেকে কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন দাবিতে বহিরাগতদের নিয়ে বিক্ষোভ ও ধর্মঘট করে তুসুকা গ্রুপের তুসুকা জিন্স, তুসুকা ট্রাউজার্স, তুসুকা প্রসেসিং, তুসুকা প্যাকেজিং, তুসুকা ডেনিম এবং তুসুকা ওয়াশিং কারখানার শ্রমিকরা। এসময় তারা কারাখানার কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর করে। এ পরিস্থিতিতে গত ৩ নভেম্বর থেকে ওই ৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। কারখানায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ৪দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেয়া হয়। এ খবর পেয়ে সকাল থেকে পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা কারখানার সামনে ভিড় করে। এসময় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও অন্যায়ভাবে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তুসুকা ট্রাউজার লিমিটেড কারখানার অপারেটর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কোনো অপরাধ নেই। তারপরও আমাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। রাতে ছাটাইকৃত শ্রমিকদের মোবাইলে ছাটাইয়ের মেসেজ দেয়া হয়। মেসেজে ছাটাইকৃতদেরকে তাদের সমুদয় পাওনাদি কারখানার হিসাব শাখা হতে নেওয়ার জন্যও বলা হয়।

এ বিষয়ে তুসুকা গ্রুপের পরিচালক তারেক হাসান বলেন, সরকারি ঘোষণা ও বিজিএমই-এর নির্দেশনা মেনে গত জুলাই মাসে শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়। তারপরও অতিরিক্ত সুবিধা চেয়ে আন্দোলনে নামে। কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একাধিকবার শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহবান জানালেও তারা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানা ভাংচুর ও কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর করে। এ প্রেক্ষিতে ওই কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শ্রম আইনের বিধি মোতাবেক ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাদের সব পাওনাদি শ্রম আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের কোনাবাড়ী-কাশিমপুর জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবর পেয়েছি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কতজন ছাটাই করা হয়েছে, তা আমাকে জানানো হয়নি।