বিএনপির কর্মীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাছান তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করে জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এই আসামি শেখ হাসিনা সরকারের সচিব ছিলেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তার প্রতি খুশি হয়ে শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রীত্ব উপহার দিয়েছেন। তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন রাম-রাজত্ব কায়েম করেছেন। অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়ে হাজার হাজার কোটি আত্মসাৎ করে তা পাচার করেছেন। মানুষ হত্যা, খুন, ঘুম করতে সহযোগিতা করেছে। সে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে দেখা গেছে গত ১৩ জুলাই কোটাবিরোধী বক্তব্য পর্যন্ত দিয়েছে। ’

এরপর আসামি পক্ষে আইনজীবী আবু সুফিয়ান রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিনের আবেদন করে বলেন, ‘মোকতাদির কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। তিনি ফ্যাসিস্টের কোন সহযোগিতা করেননি।

একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য লড়াই করেছেন। দেশের উন্নয়নের জন্য তিনি অনেক কাজ করেছেন। ২০২১ সালে মোকতাদির ৫০ শতাংশ হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। মানবিক দিক বিবেচনা করে আসামির জামিনের প্রার্থনা করছি। ’

এরপর বিচারক বলেন, ‘আরও কি, কারও কিছু বলার আছে?’

তখন আইনজীব সুফিয়ান বলেন, ‘তিনি নির্বাচিত সংসদ সদস্য। জণগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।’

এই কথার বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি নয়ন বলে ওঠেন, ‘আসামি ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অবৈধভাবে নির্বাচিত মন্ত্রী। এই কথা বলে আর অনেক কটু কথা বলতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। আদালতে উত্তেজিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’

তখন বিচারক বলে ওঠেন, ‘কোর্টে মান সম্মানটা বজায় রাখেন। নেক্সটাইম কোর্টের সম্মান, সিনিয়রদের সম্মান বজায় রাখবেন।’ এরপর বিচারক ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর একদফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এর আগে, ৭ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায়। কার্যালয়ে ভাঙচুর করে। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার-হাজার নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় মাহফুজুর রহমান নামের একজন গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।