উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী ৮ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যাচ্ছেন বলে জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। আজ বুধবার এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, ৮ নভেম্বর লন্ডন যাবেন খালেদা জিয়া। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা সহায়তায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং তদারকি করছে।

খালেদা জিয়া পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে যুক্তরাজ্যে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তাকে লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে। তার চিকিৎসায় গঠিত বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের সাত সদস্য, পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান, দুই গৃহপরিচারিকা ও দুই নার্স সঙ্গে যাওয়ার কথা রয়েছে।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী পরে তাকে তৃতীয় কোনো দেশের একটি ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে’ভর্তি করা হতে পারে।

চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়াকে এমন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে নেওয়া হবে, সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বর্তমান শর্ট ডিসটেন্সে চার ঘণ্টায় যাওয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, যা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে রোগী নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লন্ডন যেতে ১৪ ঘণ্টার লং ডিসটেন্স এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পৃথিবী কয়েকটি দেশে রয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে চিকিৎসকরা আলোচনাও করেছেন।

জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার প্রতিস্থাপন করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।

এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই টিমে দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী কার্ডিওলস্টি ডা. জুবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন চিকিৎসক রয়েছেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে চিকিৎসক-নার্সসহ আত্মীয়স্বজন যারা যাবেন, তা জানানো হয়েছে।