গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবীতে এক ব্যক্তিকে খুন করেছে প্রতিবেশী এক বন্ধু। ঘটনার প্রায় চার মাস পর শুক্রবার অপহৃত ওই ব্যক্তির বস্তা বন্দি গলিত লাশ স্থানীয় দড়িপাড়া গ্রামের রেললাইনের পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এঘটনায় প্রতিবেশী ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিহত রেক্সি বাবু রোজারিও (৪৩) কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের মুকুল রোজারিওর ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত যুবক লিংকন জন রোজারিও (৩৮) একই গ্রামের মৃত লিও রোজারিওর ছেলে।

নিহতের বাবা মুকুল রোজারিও জানান, গত ১০ জুলাই দুপুরে প্রতিবেশী লিংকন জন রোজারিও তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রেক্সি বাবু রোজারিওকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। বিকেলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা রেক্সি বাবু রোজারিওকে অপহরণের কথা জানিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে পরিবারের কাছে ছেলের মোবাইল থেকে ফোন করে। এসময় অপহরণকারীরা রেক্সি বাবুকে জীবিত পেতে হলে মুক্তিপণের ওই টাকা গাজীপুর শাল বনে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা অপহৃতের বাবাকে জানায়। এদিকে ওইদিন গভীর রাতেও ছেলে বাড়ী ফিরে না আসায় সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে স্বজনরা। তার সন্ধান না পেয়ে ওইদিন রাতেই কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৪৭৫) করা হয়।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, রেক্সি বাবু রোজারিও অপহরণের ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের একাধিক টিম নানা প্রযুক্তি ও কৌশলে তদন্তে নামে। তদন্তের এক পর্যায়ে এ ঘটনায় জড়িত লিংকন জন রোজারিওকে শুক্রবার ভোরে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিনের মাছের ঘের থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ওই মাছের ঘেরে ছদ্মনাম (শাকিল) পরিচয় দিয়ে চাকরি নিয়েছিল। পওে গ্রেপ্তারকৃতের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের ঢাকা-ভৈরব রেললাইনের পাশের একটি ডোবা থেকে অপহৃত রেক্সি বাবু রোজারিও’র গলিত লাশ প্লাস্টিকের বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নিহতের কোমড়ে রশি বাঁধা ছিল। তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তরকৃত লিংকন জন রোজারিও জানিয়েছে। এভ্যাপাওে আইনগত ব্যস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

লাশ উদ্ধারের সময় গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, কালীগঞ্জ থানার ওসি আলাউদ্দিন ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাজিউল্লাহসহ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই মিজানসহ কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।