বিএনপি কর্মী মকবুলকে হত্যার অভিযোগের মামলায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের ৩ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।আজ শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার এই আদেশ দেন।

ঢাকার সিএমএম আদালতে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাচান তাকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘হেলালুদ্দীন নির্বাচনের সময় টিভিতে এমন বক্তব্য রাখতেন যে কোটি কোটি মানুষ ভোট দিয়েছে। ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি এর মাস্টারমাইন্ড। হাসিনা সরকারের কাছ থেকে ইভিএম এক হাজার কোটি টাকা নেয়। বক্তব্য দেওয়ার সময় টিভির সামনে এমনভাবে বসত তিনি রাজা, বাকিরা প্রজা। ’

এ সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন হেলালুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকায় আমি কখনো যাইনি৷ আড়াই বছর আগে চাকরি থেকে অবসরে যাই। ২০১৬ সালের পর ওই এলাকায় যাইনি। ’

ইভিএম’র জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর বলেন, ‘ইভিএম নির্বাচন কমিশন ক্রয় করেনি। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এটা কেনা হয়। আমি কোনোভাবে ইভিএম ক্রয়ের সাথে সম্পৃক্ত না। ৩৫ বছর চাকরি করেছি। বিএনপি, এরশাদ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চাকরি করেছি। ১০ বছর ম্যাজিস্ট্রেসি করেছি। আমি আপনার কাছে ন্যায় বিচার আশা করি। ’

এরপর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক হেলালুদ্দীনের ১০ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। তখন হেলালুদ্দীন হাস্যরসাত্মকভাবে বলেন, ‘ইভিএম তো আপনারাই কিনেছেন।’

এতে ক্ষিপ্ত হন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তাকে ধমক ও কটুক্তি করতে থাকেন। তখন হেলালুদ্দীন হাত জোড় করে তাদের কাছে ক্ষমা চান।

এর আগে, গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরীর খুলশী থানার তুলাতলী এলাকা থেকে হেলালুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর একদফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।