বিএনপির কেউ কোনো ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয়তাবাদী নামে কেউ কোনো সংগঠন করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপির কেউ যদি ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে যায় তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ও দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘কিছু সুবিধাবাদী ও বাটপার টাইপের কিছু মানুষ দলের নাম ভাঙিয়ে নানা ধরনের কাজ করছে। তারা নানা ব্যনারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী নাম দিয়ে আরেকটি নাম বসিয়ে যারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি করে, এর সঙ্গে বিএনপির ও দলের ১১টি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনোসম্পর্ক নেই।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বাইরে বিএনপির স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাব, ডাক্তারদের সংগঠন ড্যাব, শিক্ষক-কর্মচারী, ইঞ্জিনিয়ার ও কৃষিবিদদের পৃথক সংগঠন, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ আরও কয়েকটি সংগঠন আছে। এর বাইরে যারা অন্য কোনোসংগঠন করে দল ও জাতীয়তাবাদী নাম দিয়ে প্রোগ্রাম করছে, তারা সম্পূর্নরূপে বিএনপির বিরোধী লোক। তাদের সঙ্গে দলের বা পেশাজীবী সংগঠনের কেউ থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘হয়তো তারা কোনভাবে বিএনপি করতে পারেন, তবে তারা এটা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করছেন। এরপরও যদি দেখি তাহলে মামলা দায়ের করতে বাধ্য হবো। কারণ এসব ভুঁইফোড় সংগঠন নানা ধরনের চাঁদাবাজি করছে, নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। সুতরাং যারা এসব সংগঠনের নামে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করে থাকেন, বিএনপি কোনোভাবেই তাদের দলীয় লোক হিসেবে গ্রাহ্য করবে না। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যা এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘পৃথিবী কাঁপানো এক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে ছাত্র-জনতা। এই ফ্যাসিস্টকে সরাতে অনেকে রক্ত আর প্রাণ দিতে হয়েছে। ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে অসংখ্য ছাত্র, শ্রমিক, জনতা জীবন দিয়েছে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তারা প্রসাদ চায়না, খেয়ে পড়ে বাঁচতে চায়। কিন্তু এখনো দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি সরকার।’

তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানির জন্য বিকল্প দেশ দেখা দরকার ছিল, যে উদ্যোগ সরকার নেয়নি। একটা ফ্যাসিস্ট সরকার গেছে, সেখানে তো জনগণের কল্যাণে যে কর্মসূচি নেওয়া দরকার তা নেওয়া হয়নি। সরকারের কাছে রাতারাতি তো কিছু চায় না মানুষ, কিন্তু উদ্যেগগুলো দেখতে চায়। কিছু কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু অত্যন্ত মন্থর গতিতে।’

দুর্ভিক্ষ হওয়ার দেশে একমাত্র শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খাদ্যের স্বয়ংপূর্ণ এনেছিলেন জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমাদেরকে কেন পরনির্ভরশীল হতে হবে? সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে? নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমছে না, তাহলে বুঝতে হবে সিন্ডিকেটবাজরা সক্রিয় আছে। সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ বাঁচতে পারবে না।’ ন

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আব্দুল খালেক, আসাদুল করিম শাহীন, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, যুবদলের সাবেক নেতা এস এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।