গাজীপুরে হাত-পা বেঁধে ও দুই হাতের ৮টি আঙ্গুল কেটে এক যুবককে খুনের ক্লুলেস ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে জিএমপি। এ ঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনাক্ত হয়েছে খুন হওয়া যুবকের পরিচয়। ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ নাজির আহমদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
নিহতের নাম নাঈম মাঝি (৩০)। তিনি শরীতপুরের গোসাইহাট থানার কোদালপুর হাওলাদার পাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতের নাম সুমন মিয়া (৩১)। তিনি গাজীপুর মহানগরের সামান্তপুর এলাকার মনির হোসেনের ছেলে।
জিএমপি’র ওই কর্মকর্তা জানান, গত ১৫ অক্টোবর সদর থানার সামান্তপুর এলাকা থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের ডান চোখে আঘাতের চিহ্ন, দুই হাত ও পা রশি দিয়ে বাঁধা, দু’হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি বাদে বাকি ৮টি আঙ্গুল কাটা ও পুরুষাঙ্গে সুতা দিয়ে পেঁচানো ছিল। প্রাথমিক অবস্থায় লাশের পরিচয় কেউ সনাক্ত করতে পারেনি। এমনকি ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর মাধ্যমেও তার পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয় নি। পরে লাশের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে নিহতকে শনাক্ত করে তার নাম নাঈম মাঝি বলে জানায় তার ভাই সায়েম মাঝি। পরে তিনি (সায়েম মাঝি) এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ ক্লুলেস এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে হত্যাকান্ডে জড়িত সুমন মিয়াকে রবিবার সামন্তপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরো বলেন, নাঈম মাঝি চট্টগ্রাম থেকে সুমন মিয়াদের নিকট ইয়াবা পরিবহন করতো। ইয়াবা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সুমন মিয়া ও তার তিন সহযোগী নাঈম মাঝিকে আটকে পরিবারের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরী হওয়ায় তারা নাঈম মাঝিকে সামন্তপুর এলাকার রূপালী মৎস খামারের পাশ^বর্তী একটি ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে তারা নাঈম মাঝির হাত-পা বেঁধে দুই হাতের ৮টি আঙ্গুল কাটে ও চোখে আঘাত করে। এসময় গলায় জিআই তার পেঁচিয়ে নাঈম মাঝিকে শ^াসরোধে হত্যা করে লাশ ফেলে গা ঢাকা দেয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় গ্রেপ্তারকৃত সুমন মিয়া।
ডিসি মোহাম্মদ নাজির আহমদ বলেন, গ্রেপ্তার সুমন মিয়াকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট লাবনী আক্তারের আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।