গাজীপুরের কালীগঞ্জে পাওনা টাকা পরিশোধের দাবিতে সন্তানদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সাবেক মসলিন কটন মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। শনিবার মসলিন কটন মিলস লিঃ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে এ কর্মসূচি স্থানীয় ভাদার্ত্তী এলাকার রিফাত গার্মেন্টেসের (সাবেক মসলিন কটন মিলসের বর্তমান নাম) ১ নম্বর গেইটে পালন করেন তারা।
অবস্থান কর্মসুচিতে অংশ নেয়া সাবেক শ্রমিক-কর্মচারীরা বলেন, ১৯৫৩ সালে মসলিন কটন মিলে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন শ্রমিক-কর্মচারীরা। ১৯৭০ সালে শ্রমিক-কর্মচারীদের পরিশ্রমের টাকায় জমি ক্রয়সহ শ্রমিক কলেজ প্রতিষ্ঠিত করি আমরা। কলেজটি আমাদের চাঁদার টাকায় পরিচালিত হয়। ১৯৮২ সালে মিলটি প্রাইভেট লিঃ হয়। এতে ভূঁইয়া গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের মালিকানা ছিল ৫১% এবং সরকারের মালিকানা ছিল ৪৯%। মিলটি চলমান অবস্থায় ১৯৯৩ সালে কর্মচারী-শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দেয়। পরবর্তীতে কোন নোটিশ প্রদান না করে কাঁচামালের অভাব দেখিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের ছুটি বর্ধিত করতে থাকে কর্তৃপক্ষ। শ্রমআইন অনুসারে চাকরিতে নিয়োগ প্রাপ্তির তারিখ থেকে সার্ভিস বেনিফিট প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ ৭ মাসের বকেয়া বেতনসহ আমরা এখনো পাওনা আছি। বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারীরা সার্ভিস বেনিফিট ও প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ ২০০ কোটি টাকার উপরে বকেয়া পাওনা রয়েছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের বিষয়টি নিয়ে গত ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৭১৯ জনের ছবি সংযুক্ত একটি তালিকাসহ তথ্য জমা দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে এসব শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থকষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা এবং পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টাসহ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।
তারা আরো বলেন, তৎকালীন সরকারের আমলে দুর্নীতির মাধ্যমে ৪ হাজার কোটি টাকার মসলিন কটন মিলস লিঃ মাত্র ১৩৫ কোটি টাকায় বিক্রি ও হস্তান্তর করে। গত ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান রিফাত গার্মেন্টেসের চুক্তির মেয়াদ বাতিল হয়েছে। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ও কর ফাঁকি দিচ্ছে গার্মেন্টেসটির বর্তমান মালিক। এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত চাই আমরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ওই মিলটির সাবেক শ্রমিক-কর্মচারীদের সন্তানরা বলেন, বাবার বকেয়া পাওনা টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।