গাজীপুরে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে দলীয় ওই পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। রবিবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত ইমরান হোসেন শিশির কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের সাফাইশ্রী গ্রামের আব্দুর রশিদ মাস্টারের ছেলে।

অব্যাহতি প্রদানের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া এসংক্রান্ত একটি ভিডিও থেকে জানা গেছে, গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের ওই নেতার বিরুদ্ধে ভিকটিমকে (২৭) বিয়ের প্রলোভনে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এতে ভিকটিম অন্তসত্ত্বা (বেবিও কনসেপ্ট) হয়ে পড়েন। প্রায় ৬ বছর যাবত তার সঙ্গে সম্পর্ক চলছে। এসময়ে ভিকটিম চারবার বেবি কনসেপ্ট করে। পরে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ঔষধ সেবন করিয়ে গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে তাকে বিভিন্ন সময় কক্সবাজার এবং ভারতেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সমগ্র বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।

ভিডিও সাক্ষাৎকারে ভিকটিম অভিযোগ করে বলেন, ইমরান হোসেন শিশির যখন কাপাসিয়া ছাত্রদলের আহ্বায়ক ছিলেন তখন ভিকটিম কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজে লেখাপড়া করতেন। শিশিরের সঙ্গে ৬ বছর আগে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক হয়। সেই সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন ছাত্রদল নেতা শিশির। গত ছয় বছরে তারা একসঙ্গে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন রিসোর্ট এবং ভারতে বেড়াতে গিয়ে শারিরীক মেলামেশা করেছে। ওই সময়ে আবাসিক হোটেল ও বিভিন্ন রিসোর্টে অবস্থানকালীন একান্ত ভিডিও এবং খুবই ঘনিষ্ঠ কিছু স্থিরচিত্র সাংবাদিকদেরকে দেখান।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তিনি আরো বলেন, ওই নেতা তাকে বলেন ছাত্রদলে থাকা অবস্থায় বিয়ে করলে ছাত্রদলে তার পদ থাকবে না। তাই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুত দেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সে আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। আমি তো তাকে চাই। এমতাবস্থায় ভিকটিম ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ জানালে বিষয়টি মিমাংসার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু ওই নেতা এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না। উল্টো ছাত্রদল নেতা ইমরান নিজে এবং তার বন্ধুদের দিয়ে তাকে বাড়ি ভাংচুরসহ প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। ভিকটিমকে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে ফল ভালো হবে না বলেও হুমকি দেয়া হয়। সম্প্রতি আমি জানতে পারি ওই নেতা বিবাহিত। সেই মেয়েও নেতার সাথে ভিকটিমকে গালিগালাজ করে এবং পুলিশ নিয়ে ভিকটিমের বাড়ী যাওয়ারও হুমকি দেয়।

অভিযুক্ত ইমরান হোসেন শিশির মুঠোফোনে বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দলীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী ওই নারীকে প্রভাবিত ও ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে ওই নারী তার ভুল বুঝতে পেরে সে নিজেই তার ফেববুকে আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ মিথ্যা বলে স্বীকার করে। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে যেসব আভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।