আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম চিহ্নিত করা হবে জানিয়েছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ঘটে যাওয়া অনিয়ম ও ব্যত্যয়গুলো চিহ্নিত করা হবে। এরপর কিছু সুপারিশমালা তৈরি করে উপদেষ্টামণ্ডলীর কাছে উপস্থাপন করবে কমিশন।
বিগত তিনটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী অগ্রাধিকার দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই যেসব অনিয়ম, ব্যত্যয় ঘটেছে, এগুলো আমরা চিহ্নিত করব। ভালো কিছু হয়ে থাকলে সেগুলোও চিহ্নিত করব। নির্বাচনী প্রক্রিয়াটা তো একদিনের বিষয় নয়। এটা একটা সাইকেল (চক্র)। এ সাইকেল পর্যালোচনা করে ব্যত্যয় যা করেছে তা চিহ্নিত করে সুপারিশ করব।’
অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘আমাদের সুপারিশ থাকবে। তবে সে কথা বলার সময় এখনো আসেনি। আমরা কর্মকর্তা এবং কমিশনের বিষয়ও পর্যালোচনা করব।’
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কর্মতৎপড়তা তুলে ধরে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা যথাসময়ে কাজ শুরু করেছি। আমরা একটা ওয়েবসাইট তৈরি করছি। এতে কী থাকা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ওয়েবসাইট নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সাব-ডোমেইন হবে। এটা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আইন-কানুন বিধিমালা পর্যালোচনা করছি। যাতে আমাদের সুস্পষ্ট ধারণা হয় এবং সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে সংস্কার করতে পারি। সবার কাছ থেকে তথ্য, প্রস্তাব, সুপারিশ চাইব।’
সংবিধান নিয়ে কোনো আলোচনা করছেন কি না, জানতে চাইলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা লাইন ধরে ধরে পর্যালোচনা করছি। সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু নয়। যেদিন আমরা সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠাব, সেদিন এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। সবচেয়ে বড় আইন হলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)। আরপিও আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য এটা ‘‘মাদার অব ল’’।’
তিনি বলেন, ‘এরপর সীমানা পুনর্নিধারণ আইন আছে, ভোটার তালিকা আইন আছে, ইসি সচিবালয় আইন আছে, এরকম অনেক আইন আছে। আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন আছে। সেগুলো নিয়েও পর্যালোচনা করতে হবে। পর্যালোচনা করে সে বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক এমন অনেক কাজ বিস্তৃত, যেগুলো আমরা পর্যালোচনা করব। কমিশনের নিয়োগের আইন অগ্রাধিকার। সরকার যখন চাইবে আমরা আশাকরি তখনই উনাদের একটা খসড়া দিতে পারব।’