স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লে: জেনারেল (অব:) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আসন্ন দূর্গাপূজায় কোন ধরণের কোন শঙ্কা নেই। পূজা যেন আনন্দ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয় সেজন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অন্য সময় নিরাপত্তায় পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক, গ্রামপুলিশ থাকত। এবার তাদের সাথে র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী মোতায়েন থাকবে। আপনারা সহযোগিতা করবেন। আমি আশা করি- এবার পূজা খুব ভালভাবে হবে।

তিনি মঙ্গলবার জয়দেবপুর বাজারের কৃপাময়ী কালীমন্দিরের দূর্গামন্ডপ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব বলেন। এর আগে তিনি গাজীপুরের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বীজ প্রত্যয়ণ এজেন্সি ও বাংলাদেশ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নাটা) পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠাণগুলোর বিভিন্ন বিভাগ ও প্রদর্শণী স্টল পরিদর্শণ করেন।

উপদেষ্টা লে: জেনারেল (অব:) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এবারের দূর্গাপূজা উদযাপনে সরকারের তরফ থেকে যত ধরনের সহযোগিতা দরকার তা করা হবে। এবার পূজার জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্ধ ৪ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোন সরকার পূজা উদযাপনে ৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়নি। পূজা উপলক্ষে এবারই প্রথম ছুটি একদিন বাড়িয়ে ৪দিন করা হয়েছে। এবার আপনারা খুব শান্তিতে এবং আনন্দের সাথে পূজা উদযাপন করবেন।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ ব্যাপারে পদক্ষেপ আপনাদের নিতে পারেন। সত্যিকারে কি হচ্ছে এটা যদি আপনারা সবাইকে জানান তাহলে দেখবেন তাদের অপপ্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, মক কালচারটা আগেও ছিল, এখন সেটি রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

উপদেষ্টা বাজার সিন্ডিকেটের বিষয়ে বলেন, বাজার সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রনালয় চেষ্টা করছে। আমার মনে হয় খুব শীঘ্রই বাজার একটি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। যদি কোন সিন্ডিকেট থাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অবশ্যই সেটি ভেঙে দিবে।

তিনি আরো বলেন, দেশে সবচেয়ে বেশি কনট্রিবিউশন (অবদান) কৃষির। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে আমাদের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। আবাদযোগ্য জমির সংখা যা ছিল তা এখন কমে গেছে। এখন জনসংখ্যা হয়ে গেছে সাড়ে ১৭ কোটি। এটির উন্নতির জন্য কাজ করছে ধান ও কৃষি ইনস্টিটিউটগুলো। সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের মাঝে বীজ, চারা এবং নগদ অর্থ পাঠানো হয়েছে। জায়গা যেন পতিত পড়ে না থাকে। দেশে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে করার আহবান জানান তিনি।
দিনব্যাপী পরিদর্শণকালে কৃষি সচিব ড. মো. এমদাদ উল্লাহ মিয়া, জিএমপি’র কমিশনার খোন্দকার মো. রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার আহমার উজ্জামান, বারি’র মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ ইউসুফ আকন্দ, ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. খালেকুজ্জামান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, জেলা পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, জিএমপি’র সহকারি কমিশনার সুবীর চন্দ্র সাহা, গাজীপুর মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অরুন কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ন চন্দ্র দাস, কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটির আহবায়ক মনীন্দ্র চন্দ্র মন্ডল ও সদস্য সচিব বাপ্পী সাহা, দিলীপ কুমার সরকার ও রাজু সাহা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।