শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যায় এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
পানিবন্দি মানুষের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিজিবি কাজ করছে। এছাড়া গতকাল সকাল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন।
এদিকে শনিবার রাত থেকে নতুন করে শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলার আরও ৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় শেরপুরের মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালি, ভোগাই ও মৃগী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শেরপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত শেরপুরের ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় লাখ মানুষ। ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, বন্যায় শনিবার রাতে নকলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বন্যায় নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাঁচজন ও ঝিনাইগাতীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকার জানান, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, জেলার অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অন্তত ৭০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উপজেলার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রানা বলেন, নালিতাবাড়ীতে ১২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘জেলার বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গতদের শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একইসঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাচ্ছি।’
