ইসরাইলের উপর সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইরানের সশস্ত্র বাহিনীকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি আরো বলেন, এই হামলা ইরানের ন্যায্য অধিকার। আর এটি ইসরাইলের জন্য ন্যূনতম শাস্তি।
লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাত উপলক্ষে এবং ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের আল-আকসা তুফান অভিযানের প্রথম বার্ষিকীকে সামনে রেখে আজ তেহরানে ইমাম খোমেনী রহ. মুসাল্লায় জুমার নামাজের ইমামতি করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ইরান তার দায়িত্ব পালনে বিলম্ব বা তাড়াহুড়ো করবে না। একইসাথে তিনি মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আয়াতুল্লাহ খোমেনি বলেন, বিভক্তি সৃষ্টি করা শত্রুদের নীতি। কুরআন অনুসারে, মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হলে তারা শত্রুদের পরাস্ত করতে পারে। সেজন্য ইরানি জাতির শত্রু ইরাকি জাতির শত্রু। লেবাননের জাতিরও একই শত্রু। একই শত্রু মিশরীয় জাতির। মোটকথা আমাদের সকলের শত্রু একই।
আল-আকসা তুফান অভিযানের কথা উল্লেখ করে ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এই অভিযান একটি আইনি ও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং ফিলিস্তিনিরা সঠিক ছিল।
হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে স্মরণ করে আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, হাসান নাসরুল্লাহ আমার ভাই। তিনি আমার প্রিয় এবং আমার গর্ব। ইসলামী বিশ্বের প্রিয় মুখ তিনি। এই অঞ্চলের জাতিগুলোর মাঝে তিনি দারুণ বাগ্মী ভাষী। তিনি ছিলেন লেবাননের উজ্জ্বল রত্ন।
খোমেনি বলেন, ‘আমি তেহরানে জুমার নামাজে সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা এবং সবাইকে কিছু বিষয় জানানো প্রয়োজন মনে করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রিয় ভাইয়ের শাহাদাতে আমরা সবাই খুবই শোকাহত। এটি লেবাননের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তবে আমাদের শোকের অর্থ হতাশা, যন্ত্রণা নয়। বরং এটি প্রাণবন্ত, শিক্ষণীয়, প্রেরণাদায়ক এবং আশাব্যঞ্জক।
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, যদিও নাসরাল্লাহর দেহ এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। তবে তার প্রকৃত ব্যক্তিত্ব, তার আত্মা, তার পথ এবং তার অভিব্যক্তিপূর্ণ কণ্ঠ এখনো আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে। চিরকাল আমাদের সাথে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, হাসান নারুল্লাহ ছিলেন অত্যাচারী এবং শিকারী দানবদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের উচ্চ পতাকা। তিনি একজন বাগ্মী কণ্ঠ এবং নিপীড়িতদের সাহসী রক্ষক। তিনি ছিলেন যোদ্ধা ও অধিকারপ্রার্থীদের উৎসাহ ও বীরত্বের উৎস। তার জনপ্রিয়তা ও প্রভাব লেবানন, ইরান ও আরব দেশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন তার শাহাদাত এই প্রভাবকে আরো বাড়িয়ে দেবে।
তিনি বলেন, এই খুতবাটির শ্রোতা সমগ্র ইসলামী বিশ্ব। তবে এটি বিশেষভাবে লেবানন ও ফিলিস্তিনের প্রিয় জাতিকে সম্বোধন করা হয়েছে।
এ সময় এই অঞ্চলে যুদ্ধ, নিরাপত্তাহীনতা এবং পশ্চাদপদতার প্রধান কারণ হিসেবে জায়নবাদী শাসনের অস্তিত্বকে চিহ্নিত করেছেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে তেহরানের গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদের দরজা স্থানীয় সকাল সাড়ে ৫টা থেকে খুলে দেয়া হয়। কারণ মরহুম হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ এবং আইআরজিসি জেনারেল আব্বাস নীলফোরোশানের স্মরণ অনুষ্ঠান সাড়ে ১০টায় তেহরানে শুরু হয়।
সূত্র : মেহের নিউজ এজেন্সি