ভারতকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন, কিন্তু তার কথামতো যদি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল তৈরির চেষ্টা করেন, তাহলে দেশের ১৮ কোটি মানুষ শহীদি চেতনা নিয়ে আবারো রাজপথে নামবে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দিল্লির কোনো গোলামকে আর দেশের জনগণের ওপর রাজত্ব করতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশ সিকিম বা ভুটান নয় যে- অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশনে চলবে। বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশনে চলবে না।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর ভুবনমোহন পার্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর প্রতিনিধিদল ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে মহানগর ও জেলার শহীদ পরিবারের সাথে এই সাক্ষাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আলী ইমাম মজুমদারদের মতো শেখ সরকারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলারা অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকলে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সফল হবে না’।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে কিসের উন্নয়ন হয়েছে? তার আমলে ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার লোন করা হয়েছে। আর ১৭ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এটা কিসের উন্নয়ন! তিনি তার লোকজনদের বিদেশে কালোটাকা পাচার করার সুযোগ দিয়েছেন; লুট করার সুযোগ দিয়েছেন।

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে যেসব আমলা, ডিসি ও সচিবেরা চেষ্টা করেছিলেন, এরা তো নিশ্চয়ই আছেন। তারা কাজও করছেন। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। তারা সংস্কারের কথাও বলছে। তবে এই সমস্ত প্রেতাত্মারা যদি থেকে যায়, তাহলে আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন, সেটি প্রকৃত অর্থে বাস্তবায়ন হবে না। তারা কেউ কেউ এই সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য ভেতর থেকে চেষ্টা করতে পারে।’

সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনারা আওয়ামী সরকারের যেসব অস্ত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন, সেগুলো কিন্তু উদ্ধার করতে পারেননি। অবৈধ অস্ত্র এখনো যুবলীগ-ছাত্রলীগের হাতে আছে। সেই অস্ত্র শেখ হাসিনা দিয়েছিল। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। তা না হলে তারা ফের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।’

এ সময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্যসচিব মামুন-অর-রশীদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, উপদেষ্টা আলমগীর কবীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য ফারজানা পুতুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য দেবাশিষ রায় মধু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে নিহত তিনজনের পরিবারের হাতে দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।