অস্বস্তিকর গরমের পর টানা দুইদিন ধরে কাউনিয়া উপজেলাসহ রংপুরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ঝরছে।বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। এদিকে হালকা থেকে মাঝারি, আবার ভারি বর্ষণের ফলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের সব কটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তবে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার দুদিন পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আছে। এর ফলে তিস্তা নদীর পানি সমতল আগামী দুদিন পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তীদিন পর্যন্ত নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী দুই দিন পর্যন্ত রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্ক সীমায় প্রবাহিত হতে পারে। এতে করে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ৬টায় ও ৯টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার এবং বেলা ১২টায় ৫১ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। বিকেল ৩টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে, বিকেল ৩টায় কাউনিয়া রেলসেতু পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২৮ দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে, সকাল ৬টায় বিপৎসীমার দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, ‘অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪ জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।’

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, ‘অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।’

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর জেলায় ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ রংপুর বিভাগসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ভারি বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুরের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।’