শিক্ষা কমিশন থেকে কায়সার মামুন ও সামিনা লুৎফাকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল এলাকার কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান। সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহ জেলা শাখা।

মামুনুল হক বলেন,‘শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষাব্যবস্থায় যেমন হিন্দুত্ববাদ বরদাস্ত করব না, তেমনি নাস্তিক্যবাদ বরদাস্ত করব না। কাজেই শিক্ষা কমিশনের মধ্যে যে সকল নাস্তিক, মুর্তাদদের অন্তর্ভুক্ত করে দেশের আগামী দিনের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করার চেষ্টা করছেন, এই নাস্তিক, মুর্তাদ, বামদেরকে এখান থেকে সরাতে হবে। সুনির্দিষ্টভাবে আমি দুটি নামের কথা বলছি, কায়সার মামুন ও সামিনা লুৎফা এই দুই কুলাঙ্গারকে শিক্ষা কমিশনে আমরা দেখতে চাই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্স জেন্ডারের নামে সমকামিতা, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার মতো ইসলাম বিরোধী কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হলে আমরা কারবালা তৈরি করব। শিক্ষা কমিশনে ইসলামী শিক্ষাবিদ আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যে কমিশন আপনারা গঠন করেছেন সেটিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। শিক্ষাব্যবস্থা এবং কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইনের প্রশ্নে আপোস চলবে না। প্রয়োজন হলে আমরা আবার শাপলা চত্বরে যাব। ইসলাম বিরোধী এজেন্ডা আমরা রুখে দিব।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘ট্রান্স জেন্ডারের নামে সমকামিতার অসভ্যতা বাংলাদেশে বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের চূড়ান্ত বক্তব্য আল্লাহর জমিনে খেলাফত কায়েম করা। মানবরচিত যাতাকল থেকে জাতীকে মুক্ত করা। আল্লাহর জমিনে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের জন্য আমাদের সংগ্রাহ চলবে। হয়তো খেলাফত, নয়তো শাহাদাৎ।’

মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলাম বিরোধী কোনো এজেন্ডা যদি পশ্চিমা সভ্যতার পক্ষ থেকে আমার দেশে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়, আমরা রুখে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। যদি ইসলাম বিরোধী এজেন্ডা, হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত। আমরা দেশের প্রশ্নে মানবতার প্রশ্নে, ইসলামের প্রশ্নে কারও সঙ্গে আপোষ করতে প্রস্তুত না।’

মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা বলিষ্ঠ ভাষায় বলতে চাই শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছি, নতুন কোনো ইসলাম বিদ্বেষী শক্তিকে বাংলার মসনদে দেখবার জন্য নয়। ইউনুস নেতৃত্বাধীন সরকারকে এখন পর্যন্ত আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। আগামী দিনেও সহযোগিতার ইচ্ছা, আগ্রহ আছে। কিন্তু সেই ইচ্ছাটা সরকারেরও থাকতে হবে। সরকারকে বুঝতে হবে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ছাড়া সরকার পরিচালনা সম্ভব নয়।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মুফতী হাবীবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমেদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, বাইতুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হেদায়াতুল্লাহ হাদী, মুহাম্মদ আবদুল মুমিন, ঢাকা দক্ষিণের সহ সভাপতি মুহাম্মাদুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানসহ আরও অনেকে।