যাত্রাবাড়ীতে গুলি করে রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে হত্যার অভিযোগের মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এদিন কারাগারে আটক আসামি নুরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৮৩৩ নম্বর রুম থেকে যাত্রাবাড়ীতে ইমরান হোসেন নামের এক তরুণ হত্যা মামলায় নুরুল ইসলাম সুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ১ সেপ্টেম্বর ইমরানের মা কোহিনূর আক্তার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করেন মামলাটি। মামলা নম্বর-৬। ইমরান হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনসহ ২৯৭ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার বাদী কোহিনূর আক্তার এজাহারে লিখেছেন, তার ছেলে ইমরান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি গত ৫ আগস্ট সকাল ৯টায় যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র ও সাধারণ জনতার আন্দোলনে যান। তখন আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে নস্যাৎ করতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আসামিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপর্যুপরি এলোপাতাড়ি গুলি, পেট্রোলবোমা, ককটেল বিস্ফোরণ, হাতবোমা ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সন্ধ্যায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নুরুল ইসলাম সুজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবার অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় নির্বাচনে পরাজিত হন। ওই সময় পঞ্চগড়-২ আসনে জয় লাভ করেন বিএনপি প্রার্থী মোজাহার হোসেন। এরপর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন নুরুল ইসলাম সুজন। তারপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো জয়ী হন তিনি। এ সময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাসদের প্রার্থী আল আমিন।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন তিনি। ওই সময় নতুন সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান নুরুল ইসলাম সুজন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর তার স্ত্রী তিন সন্তানের জননী নিলুফার ইসলাম অসুস্থতাজনিত কারণে ৫৮ বছর বয়সে মারা যান। ভোটের পরদিন দাফন সম্পন্ন হয় তার।