শিক্ষা দিবসে খাগড়াছড়ি ও পানছড়িতে মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার সকালে ‘নতুন সংবিধান’ চাই, সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাও’ শ্লোগানে এবং “স্কুলে বিতর্কিত ‘শপথনামা’ বাতিল ও গোয়েন্দা নজরদারি মুক্ত করে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে” এই দাবিতে খাগড়াছড়ি সদরের ফায়ার সার্ভিস এলাকা থেকে মিছিল বের করে চেঙ্গী স্কয়ারে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
এতে ব্ক্তব্য রাখেন পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি শান্ত চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক তৃঞ্চাঙ্কর চাকমা।
বক্তারা বলেন, মাতৃভাষাকে অক্ষুন্ন রাখতে ৫২ সালের তৎকালীন পুর্ব বাংলার ছাত্রসমাজ অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। তাদের রক্তের বিনিময়ে ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছিল। কিন্তু আজ স্বাধীন দেশে পাহাড় ও সমতলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাকিস্তানি কায়দায় সেনা গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রেখেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আজ স্বাধীন দেশে বাঙালী ভিন্ন অন্যান্য জাতিসত্তাদের জাতিসত্তার স্বীকৃতি, মাতৃভাষায় শিক্ষার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে।
পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে জেলা পরিষদের মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। যারা লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে পেরেছে তারা শিক্ষকের ভুমিকা পালন করছে। যোগ্য প্রার্থীরা টাকার অভাবে চাকরি নিতে না পারায় ঘুষের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা পাঠদান করা তো দুরের কথা ঠিকমতো রিডিংও পড়তে পারছে না। এতে পাহাড়ের শিক্ষার মান এতই বেহাল হচ্ছে যে যার ফলে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক লেভেল থেকে অনেক ছাত্র ঝরে পড়ছে। ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পরও জেলা পরিষদ সমূহের দুর্নীতিগ্রস্ত চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশাসন এখনো গ্রেফতার করেনি।
অপরদিকে পানছড়ি উপজেলার পুজগাংমুখ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ হতে পিসিপি পানছড়ি উপজেলা শাখা সভাপতি সুনীল ময় চাকমা-র সভাপতিত্বে শিক্ষা দিবস উপলক্ষে মিছিল বের করে পুজগাং বাজারে সমাবেশে মিলিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমা,পার্বত্য নারী সংঘ পানছড়ি শাখা সম্পাদক পরিমিতা চাকমা, সুর মঙ্গল চাকমা, বিকাশ চাকমা,গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম পানছড়ি উপজেলা শাখা সভাপতি রিপন ত্রিপুরা প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি, স্কুলে শপথ বাক্য পাঠের মাধ্যমে উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র বাতিল করে মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি এবং নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান।