শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বানানোর পেছনে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভূমিকা রয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর আদাবর থানায় গার্মেন্টসকর্মী রুবেল হত্যা মামলায় আজ রবিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহর আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা জানান তিনি।
আদালতে আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জানান, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ক্ষমতায় থেকে ডিসি ও ইউএনওদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, আন্দোলনকারীদের ঠিকানা খুঁজে বের করতে। আন্দোলন দমাতে, হত্যা ও গণহত্যারও নির্দেশ দেন তিনি। শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বানানোর পেছনে তার ভূমিকা রয়েছে।
এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক আব্দুল মালেক এই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে আইনজীবী ওমর ফারুক রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
শুনানিতে আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, ‘ফরহাদ হোসেনকে আগে রাজনীতিতে দেখিনি, নামও শুনিনি। হাসিনা সরকারের অবৈধ এমপি, পরে মন্ত্রী হন। জেনেছি টাকা দিয়ে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তিনি জঘন্য কাজ করেছেন। এক দিন, দুই দিন, তিন দিন এভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। কারণ স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে আন্দোলনকারীরা বাসায় থাকবে। বাসা থেকে ধরে এনে গুম, হত্যা করতে পারে। ক্ষমতা, মন্ত্রিত্বের লোভ, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করতে হাসিনাকে তারা স্বৈরাচার বানিয়েছে। আর যেন স্বৈরাচার ফিরে না আসে। গণতান্ত্রিক আবহাওয়ায় মানুষ যেন বাস করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ঘরে কি সন্তান নাই? গুলি করতে বুক, হাত কাঁপল না। এদের উসকানি ও নির্দেশ ছিল গুলি করার। এদের জনগণের আদালতে, জনগণের সামনে বিচার করা উচিত। এত অপকর্ম করেও এরা হাসে। ৭০০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়। তারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়েছে। উল্লেখযোগ্য যেসব আসামি শাস্তির আওতায় আসবে, তাদের মধ্যে ফরহাদ হোসেন একজন। আরও আছেন আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনায়েদ আহমেদ পলক। ফরহাদ হোসেনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
অপরদিকে ফরহাদ হোসেনের পক্ষে জসীম উদ্দিন সরকার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘ফরহাদ হোসেন স্বনামধন্য সিটি কলেজের প্রফেসর। সুনামের সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। ঘটনাস্থল থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঘটনার অনেকদিন পরে মামলা হয়েছে। তিনি প্রতিহিংসার শিকার। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।’
আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ফরহাদ হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে ফরহাদ হোসেনকে আটক করে র্যাব।