গাজীপুরের কালিয়াকৈরের হরিণহাটি এলাকায় গার্মেন্টসের এক নারী শ্রমিক মঙ্গলবার ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উত্তেজিত শ্রমিকরা একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাংচুর করে। বিকেল পর্যন্ত তারা প্রায় তিন ঘন্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে ও বিক্ষোভ করে। এসময় মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহনের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
নিহত নারী শ্রমিকের নাম শিরিন আক্তার (৩০)। তিনি হরিণহাটি এলাকার ষ্টারলিংক লিমিটেড নামের পোশাক তৈরির একটি কারখানার শ্রমিক বলে জানা গেছে।
পুলিশ, শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানান, দুপুরে খাবারের বিরতির সময় বাসায় যাওয়ার জন্য শিরিন আক্তারসহ ষ্টারলিং লিমিটেড কারখানার কয়েক শ্রমিক ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। তাদেরকে সড়ক পার হতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দিয়ে সহায়তা করছিলেন নিরাপত্তা কর্মীরা। এসময় টাঙ্গাইলগামী বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক শিরিন আক্তারকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। ঘটনার সময় ট্রাকের ধাক্কায় আরো তিন শ্রমিক আহত হয়। শ্রমিক হতাহতের এ খবর পেয়ে কারখানার শত শত শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং লাঠিসোটা নিয়ে মহাসড়কে নেমে এসে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং অর্ধশতাধিক গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে। মহাসড়ক অবরোধের কারণে উভয় পাশে প্রায় ১০কিলোমিটারর দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে অবরোধকারী শ্রমিকদের মহাসড়কের উপর থেকে সরিয়ে দিলে বিকেল সোয়া চারটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ ও নাওজোড় হাইওয়ে থানার ওসি শাহাদাত হোসেন জানান, এক নারী শ্রমিক নিহতের ঘটনায় শ্রমিকরা ঘাতক ট্রাকটিতে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ করে এবং মহাসড়কে অবরোধ করে। কারখানা কর্তৃপক্ষ হতাহতদের ক্ষতিপূরন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়াও দ্রুত সময়ের মধ্যে কারখানাটির সামনে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।