চাকরি জাতীয়কারণের এক দাবি নিয়ে আনসার সদস্যদের আন্দোলনে টানা ১১ ঘণ্টা মুক্ত হলেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে আনসার সদস্যরা পালিয়ে যান। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্র জনতা ও প্রশাসনের সহায়তায় সচিবালয়ের গেট খুলে দেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টানা ১১ ঘণ্টা সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ রাখা হয়। এরপর ছাত্র-জনতার ও প্রশাসনের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে পালাতে শুরু করে আনসার সদস্যরা। প্রথমদিকে দুই পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হলেও এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে সকাল ১১টা থেকে সচিবালয়ের সবগুলো গেট বন্ধ করে সচিবালয়কে কার্যত অকার্যকর রাখা হয়। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর দুপুর ১টার দিকে আন্দোলনের একাংশ সচিবালয়ের তিন নম্বর গেট দিয়ে সেনাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে প্রবেশ করে স্লোগান দেন। কিছুক্ষণ পর তাদের জোর করে বের করে দেওয়া হয়। এরপর সবগুলো গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিকেল ৫টার দিকে অফিস ছুটি হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছেন না।

রাতে সচিবালয়ে কয়েকজন কর্মকর্তা- কর্মচারীরা বলেন, এভাবে আন্দোলনের নামে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখার কোনো মানেই হয় না। তাদের দাবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। তাহলে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকেও কেন অবরুদ্ধ করে রাখল? এমন চিত্র আগে কখনও দেখিনি।

এদিকে, সন্ধ্যায় সচিবালয়ের পেছনের ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে উঁচু দেয়াল টপকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যসহ কয়েকজনকে বের হতে দেখা গেছে। পরে অবশ্য আনসার সদস্যরা আর কাউকে বের হতে দেননি।

প্রসঙ্গত, চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আজ সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন আনসার সদস্যরা। এক পর্যায়ে দুপুরে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারী আনসারদের একাংশ। তারা সচিবালয়ে ৩ নম্বর গেট দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ঢুকে পড়েন।

পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তাদের প্রতিনিধিদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে, তার কিছুক্ষণ পরেই আবারও আন্দোলন শুরু করেন আনসার সদস্যরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।