রাজশাহীতে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে ‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় এবং পরে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।ভুক্তভোগী ব্যক্তির বাবা নগরের গোরহাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রানা সরকার (৫৫) এ ঘটনার প্রায় ৫ বছর পর গতকার বুধবার রাতে বাদী হয়ে নগরের বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার একমাত্র আসামির নাম মাহবুব হাসান (৪১)। তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) ছিলেন। এখন বরখাস্ত। নানা অভিযোগের কারণে আগেই তিনি পুলিশের চাকরি হারিয়েছেন।

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর তৎকালীন এসআই মাহবুব হাসান সাদাপোশাকে মাসুদ রানার বাড়ি যান এবং তার ছেলে রাজিব আলীর (৩১) মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে নগরের শিমলা বাগানে তুলে নিয়ে যান। এরপর মাহবুব হাসান রাজিবের বাবা মাসুদ রানার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জানান, এখনই ৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে। ভয়ে মাসুদ রানা শিমলা বাগানে গিয়ে মাহবুব হাসানের হাতে ৫ লাখ টাকা তুলে দেন। এ সময় মাহবুব হাসান রাজিবের বাবাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তিনি জানান, রাজিবকে তিনি বাড়ি পৌঁছে দেবেন। কিন্তু মাসুদ রানা চলে যাওয়ার পর মাহবুব হাসান তার ছেলেকে ছাড়েননি।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরদিন তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগ করার পর রাজিব এই মামলায় জামিন পান। এরপর মাহবুব হাসানের সঙ্গে দেখা হলে মাসুদ রানা টাকা ফেরত চান। তখন তিনি টাকা ফেরত দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। সর্বশেষ একমাস আগে পুলিশের বরখাস্তকৃত এই এসআইয়ের সঙ্গে নগরের রেলগেট এলাকায় দেখা হলে তিনি টাকা ফেরত চান। তখন মাহবুব হাসান মারমুখী আচরণ করে বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করেছেন। টাকা চাইলে মেরে ফেলা হবে বলে তিনি ভয় দেখান। তাই মাসুদ রানা এই মামলা দায়ের করেছেন।

ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলাটি তদন্তের জন্য থানার এসআই তাজউদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’