বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ব্যাপক সহিংসতা, প্রাণহানি এবং হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চায় জাতিসংঘ। একইসঙ্গে সহিংসতা, প্রাণহানি এবং মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির মুখোমুখি করা দরকার বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এবং সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চিঠিতে বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
এদিনের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক প্রথমে বাংলাদেশ ইস্যুতে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। এরপর সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি মহাসচিব কর্তৃক (ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে) পরিপ্রেরিত একটি চিঠি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন পেয়েছি। আমি আপনাদের বলতে পারি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চিঠিতে মহাসচিব বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, চিঠিতে মহাসচিব আরও বলেছেন— তিনি আশা করেন, যুবক ও নারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরও বিবেচনায় নেওয়াসহ ড. ইউনূসের সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা গ্রহণ করবে। তিনি সব নাগরিক এবং বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্ভর করছেন। এছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য ড. ইউনূসকে জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব, বিশেষ করে মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে।
পরে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, সংকটময় এই সময়ে বাংলাদেশ যখন স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়ে মহাসচিব যে চিঠি লিখেছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার হাসিনার দেখামাত্র গুলির নির্দেশে ৮১৯ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ২৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ। এই হত্যাকাণ্ড এবং হতাহতের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি কি জাতিসংঘ মহাসচিব করেছেন?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, হ্যাঁ। আমরা এই বিশেষ সংকটের শুরু থেকেই জবাবদিহিতার কথা বলে আসছি। সহিংসতা, প্রাণহানি এবং মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা দরকার।