বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিতে আজ শুরু হচ্ছে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি। শনিবার শহীদ মিনারের সমাবেশে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

এই কর্মসূচিতে রোববার থেকে ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের’ আহ্বান করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি দেশের সব জেলা, উপজেলা, পাড়া, মহল্লায় বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান কর্মসূচি, আন্দোলন চলাকালে হওয়া সব হত্যার বিচার ও সব রাজবন্দীকে মুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হল খুলে দেয়ার দাবি করেছেন আন্দোলনের সমন্বয়করা।

বর্তমান সরকার পদত্যাগের পর একটি জাতীয় সরকার গঠনেরও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ঘোষণাপত্রে তারা বলেন-

‘যেহেতু, বর্তমান সরকারের নির্দেশে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, নারী-শিশু-ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কেউ এ গণহত্যা থেকে রেহাই পাননি;

যেহেতু, সরকার এ হত্যাযজ্ঞের বিচার করার পরিবর্তে নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করছে;

যেহেতু, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ সংঘটন করেছে;

যেহেতু, ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-মজুরসহ আপামর জনগণ মনে করছে এ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ বিচার এবং তদন্ত সম্ভব নয়;

সেহেতু, আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করছি।

একইসাথে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবী জানাচ্ছি।’

এসময় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা জনগণকে মুক্ত করতে আবার রাস্তায় নেমে এসেছি। আমরা আজকে এক দফা দাবিতে এখানে হাজির হয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা, সমাজের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি”।

এই সরকার কোনোভাবেই আর এক মিনিটও ক্ষমতায় থাকার অধিকার রাখে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছে, গণভবনের দরজা খোলা আছে। আমরা সাধুবাদ জানাই যে তিনি বুঝতে পেরেছেন গণভবনের দরজা খোলা রাখতে হবে। কারণ তার যাবার সময় হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনি দরজা খুলে অপেক্ষা করুন। আমরা সংলাপ না, আপনাকে উৎখাত করার জন্য আসবো। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করলেই হবে না। এই যে খুন-লুটপাট, দুর্নীতি এই দেশে হয়েছে, তার বিচার হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পদত্যাগ দিয়ে তাকে কোনো এক্সিট রুট দিতে চাই না। তাকে পদত্যাগও করতে হবে, বিচারের আওতায়ও আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা না, মন্ত্রীপরিষদ, সরকার সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে। এবং এই যে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা এটাকে বিলোপ করতে হবে।’
সূত্র : বিবিসি