গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা শনিবার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে। এসময় তারা পুলিশের তিনটি পিকআপ ভ্যানসহ মাওনা হাইওয়ে থানার দুইটি পুলিশ বক্সে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠাণও ভাংচুর করেছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে এক ব্যবসায়ী নিহত ও বেশ অন্ততঃ ১৫/১৭ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সর্টগানের গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে। এদিকে একইদিন কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও গাজীপুর সদরের শিমুলতলী এলাকায়ও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা।

জানাগেছে, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল হতে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা ও পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা মাওনা উড়াল সেতু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ফিরে এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। এতে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের তিনটি গাড়ী ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং উড়াল সেতুর নিচে হাইওয়ে পুলিশের দুইটি বক্সে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাষ্টারবাড়ী থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ বাঁধা দিলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে পুলিশের কয়েক সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়। একপর্যায়ে দুপুরে পুলিশ সর্টগানের গুলি ও টিয়ারসেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার সময় মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লেপতোষকের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) নিহত হন। তিনি স্থানীয় কেওয়া বাজার থেকে তুলা আনতে গিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হন বলে স্থানীয়রা জানান। নিহতের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি ৫/৭ বছর আগে শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় বিয়ে করেন বলে তার প্রতিবেশী কাজল জানিয়েছেন।

শ্রীপুর থানার ওসি আকবর আলী খান জানান, আমরা নিরস্ত্র হাতে শান্তিপূর্ণভাবে শ্রীপুর সড়কের ভাই ভাই সিটিতে অবস্থান করছিলাম। আন্দোলকারীরা হঠাৎ করে নিরস্ত্র পুলিশের উপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা ভাই ভাই সিটির নিচে রাখা পুলিশের তিনটি গাড়ীতে হামলা করে ভাংচুর করে এবং আগুণ ধরিয়ে দেয়। পওে তারা উড়াল সেতুর নিচে হাইওয়ে পুলিশের দুটি বক্সেও আগুণ দেয়।

এদিকে একইদিন কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও গাজীপুর সদরের শিমুলতলী এলাকায়ও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা। এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেও ধাওয়ায় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।